ছাত্রী হলে ঢোকা সেই যুবক কারাগারে
Published: 20th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল থেকে আটক যুবক আশরাফুল আলম পারভেজকে (যাযাবর পারভেজ) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া চুরির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পারভেজকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়, আসামি পেশাদার চোর দলের সক্রিয় সদস্য। তার বৈধ কোনো কর্ম নেই। চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ১৮ জুলাই রাত পৌনে ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের ২১৬ নম্বর কক্ষের সামনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পেয়ে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকেন আবাসিক ছাত্রীরা। তখন এ আসামি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তল্লাশি করা হয়। সে সময় তার পরিহিত কালো ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে ছাত্রীদের চুরি যাওয়া ৯০০ টাকা জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে ঢুকে বিছানার বালিশের নিচ থেকে ৯০০ টাকা চুরি করার কথা স্বীকার করেছে পারভেজ। ছাত্রীদের হলে বিনাঅনুমতিতে পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
আশরাফুল আলম পারভেজকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফয়জুন্নেসা হলের এক ছাত্রীর সঙ্গে হলে প্রবেশ করেন পারভেজ। এ সময় তার কপালে টিপ, পরনে পালাজ্জো ও ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে হলের কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হলে বিষয়টি হল সুপারকে জানানো হয়। একপর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হল সুপারসহ কয়েকজন গিয়ে ওই ছাত্রীর কক্ষে পারভেজকে দেখতে পান। এরপর তাকে আটক করে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন রোববার বিকেলে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) জেফরুল হাসান চৌধুরী।
আশরাফুল আলম পারভেজ চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ মিস্ত্রিপাড়া মৃত মকবুল আহমেদের ছেলে।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফয়জ ন ন স
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।