কুমারখালীতে ভ্যানচালক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪
Published: 20th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভ্যানচালক মজিবর রহমান শেখ (৬২) হত্যা মামলায় তার ছোট ভাই, ভাবি, ভাগ্নেসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) মধ্যরাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ মুলগ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.
নিহত মজিবর রহমান শেখ উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ মুলগ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবে শহীদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা প্রদান
খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা নিহত
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত মজিবরের ছোট ভাই মজনু শেখ (৫৫) ও তার স্ত্রী সায়েরা খাতুন (৪৫), ভাগ্নে অমিত হাসান (৩৬) ও চাচা নাসির শেখ (৪৫)।
মামলার বাদী শরিফা খাতুন জানান, বসতবাড়ির জমি ও পাওনা টাকার জেরে তার স্বামীকে হত্যা করে স্বজনরা। তিনি সঠিক বিচার দাবি করেন।
ওসি মো. সোলায়মান শেখ জানান, জমি সংক্রান্ত এবং পাওনা টাকার জেরে ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর ভ্যানচালক মজিবর রহমানকে মারধর করে জখম করেন স্বজনরা। পরে আহত মজিবরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ১৩ নভেম্বর মজিবর রহমানের স্ত্রী শরিফা খাতুন বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল