কুয়াকাটায় জেলের জালে ধরা পড়ল বিরল বিষধর ‘লায়নফিশ’
Published: 3rd, November 2025 GMT
পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির এক বিষধর সামুদ্রিক মাছ ‘লায়নফিশ’। মাছটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘বাঘা মাছ’ নামেও পরিচিত। কেউ কেউ এটিকে ‘রাওয়া মাছ’ নামেও চেনেন। রঙিন দাগ ও লম্বা কাঁটাযুক্ত পাখনাবিশিষ্ট এই মাছ দেখে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
আজ সোমবার সকালে মহিপুর মৎস্য বন্দরের মেসার্স মুন্নী ফিশ নামের মাছের আড়তে বিরল প্রজাতির এই মাছ আনা হলে মৎস্য বন্দরজুড়ে হইচই পড়ে যায়। অনেকেই মাছটি দেখতে ভিড় জমান এবং অনেকে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন।
স্থানীয় জেলে আবদুল মন্নান মাঝি বলেন, গত পরশু কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জাল ফেললে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই অদ্ভুত মাছটিও ধরা পড়ে। দেখতে অনেক সুন্দর হলেও শুনেছেন এটি বিষধর।
মুন্নী ফিসের ব্যবস্থাপক হিরন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, এটি সাধারণ কোনো মাছ, কিন্তু পরে দেখি, রংটা অনেক অদ্ভুত আর পাখনাগুলো কাঁটার মতো। তারপরই বুঝতে পারি, এটি বিরল কিছু।’
আরও পড়ুনকুয়াকাটায় জেলের জালে ধরা পড়ল ২০ কেজি ওজনের বিরল বাদুড় মাছ০৯ আগস্ট ২০২৫মাছটির দেহে লাল, সাদা ও বাদামি রঙের ডোরাকাটা দাগ এবং লম্বা কাঁটাযুক্ত পাখনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি লায়নফিশ, যা সাধারণত ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের উষ্ণ পানিতে পাওয়া যায়।
সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার গবেষণা সহকারী মো.
মো. বখতিয়ার আরও বলেন, লায়নফিশ মূলত ছোট মাছ ও চিংড়ি খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি সাধারণত ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের উষ্ণ উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ রকম মাছ এর আগে আমিও দেখিনি। এ মাছ খালি হাতে ধরা ঝুঁকিপূর্ণ।’
আরও পড়ুনকুয়াকাটায় ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির ‘শজারু মাছ’১৮ আগস্ট ২০২৫আরও পড়ুনকুয়াকাটায় জেলের জালে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির অ্যাঞ্জেল ফিশ১০ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ষধর
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’