ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্য বিকাশ পেমেন্টে
Published: 31st, January 2025 GMT
কর্মব্যস্ত জীবনে ভ্রমণের পরিকল্পনা সাজানোয় বড় ঝক্কি হয়ে দেখা দেয় বাস-ট্রেনের টিকিট কাটা, হোটেল বুকিং, খাওয়াদাওয়াসহ নানা বিষয়। বড় দল বেঁধে ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই। তবে এই ডিজিটাল যুগে এসে ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজানো এখন আগের চেয়ে সহজ। এ ক্ষেত্রে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের কল্যাণে ভ্রমণপিপাসুরা নিজের সুবিধামতো সময়ে ঘরে বসেই পুরো ট্যুর প্ল্যান সেরে ফেলতে পারছেন। কেননা বিকাশ অ্যাপ দিয়েই ই-টিকিটিং থেকে শুরু করে হোটেল-রিসোর্ট বুক করার পাশাপাশি ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন খরচের হিসাব রাখতে পারছেন গ্রাহকরা। একটু খোঁজখবর রাখলে বিকাশ পেমেন্টে ই-টিকিটিং, হোটেল বুকিংয়ে চলা বিভিন্ন ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্ট অফার ব্যবহার করে ভ্রমণের খরচ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সামিউল ইসলাম মাসখানেক আগে বন্ধুবান্ধবসহ ঘুরতে গিয়েছিলেন বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায়। উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে ট্র্যাকিং। তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু নিয়মিতই পার্বত্য জেলাগুলোয় ট্র্যাকিংয়ে যাই এবং অন্যদের জন্যও ট্যুর প্ল্যান করে দিই, এ কারণে পরিচিত ভালো ট্যুর গাইড, রাত্রিযাপনের স্থান এবং স্থানীয় জায়গায় চলাচলের জন্য গাড়ি বা নৌকা আগে থেকেই বুকিং করে ফেলি। পেমেন্টের কিছু অংশ আগেই পাঠিয়ে দিই বিকাশে। যাত্রা শুরুর আগে দলের সদস্যদের কাছ থেকে ভ্রমণের চাঁদা সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাস বা ট্রেনের টিকিট কাটা, হোটেল বুক করাসহ সবই করতে পারছি বিকাশের মাধ্যমে।’
তিনি জানান, বিকাশের কল্যাণে অতিরিক্ত ক্যাশ টাকা বহনের ঝামেলা নেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড থেকে টাকা অ্যাড করা যায়। ফলে ভ্রমণের সময় টাকা হারানো বা চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায়।
সিলেট জেলার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ ভোলাগঞ্জ। জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী এই এলাকায় ছোট একটি খাবারের দোকান চালান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সারাদেশ থেকেই দল বেঁধে ভ্রমণপিপাসুরা– সাদা পাথর দেখতে আসেন। ঘুরতে এসে অনেকেই এখানে দুপুরের খাওয়াদাওয়া সারেন। হঠাৎ করে বড় পর্যটক দল এলে তাদের সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে আসার আগে অনেকেই ফোনে খাবারের অর্ডার দিয়ে রাখেন বিলের একটা অংশ অগ্রিম দিয়ে দেন বিকাশে। নিয়মিত অর্ডার পাওয়ায় দোকানের জন্য বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টও করে নিয়েছি।’
এদিকে যারা ‘বাজেট ফ্রেন্ডলি’ ঘোরাঘুরিতে অভ্যস্ত। ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানে বিকাশ পেমেন্টের সুবিধা তাদের জন্য বাড়তি পাওনা। এমনই এক দম্পতি সালমা ও মাসুদ, যারা নিয়ম করে প্রতি মাসেই ঘুরতে বের হন। সালমা বলেন, ‘ঘোরাঘুরি আমাদের জন্য অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আমাদের চেষ্টা থাকে ন্যূনতম বাজেটে ট্যুর প্ল্যান করা। ট্যুর প্ল্যান করার সময় কোন খাতে কত খরচ হবে তার একটা তুলনামূলক চিত্র দেখে নিতে পারি বিকাশ অ্যাপ থেকেই। বিকাশ অ্যাপ থেকে টিকিট কাটার পাশাপাশি দেখে নিতে পারি কোথায় কোন হোটেল কী অফার দিচ্ছে বা ট্যুর অপারেটররা কোনো ছাড় দিচ্ছে কিনা। অ্যাপের পাশাপাশি তাই নজর রাখি বিকাশের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলোতেও।’
বিকাশ পেমেন্টে টিকিট কাটা
অবকাশ যাপন কিংবা পরিবার-পরিজনের কাছে বেড়াতে যাওয়া বা পেশাগত প্রয়োজনে ভ্রমণের আগে প্রথম কাজ বাস, ট্রেন, লঞ্চ বা এয়ারটিকিট বুক করা। কাউন্টারে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এড়িয়ে বর্তমানে বিকাশ অ্যাপ দিয়েই স্বনামধন্য বিভিন্ন ই-টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাসরি বিকাশ পেমেন্টে টিকিট বুক করতে পারছেন গ্রাহকরা।
টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাঝে রয়েছে ‘যাত্রী’, ‘সহজ’ ও ‘বিডিটিকেটস’; যেখানে কাটা যায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চের টিকিট। আবার ডোমেস্টিক বা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারটিকিট কাটার জন্য বিকাশ অ্যাপ থেকে সরাসরি পেমেন্ট করার সুবিধা রয়েছে ট্র্যাভেল এজেন্সি ‘শেয়ারট্রিপ’, ‘গোযায়ান’ এবং ‘এমি ট্রাভেল’-এ। একই সঙ্গে বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্ট, বিনোদন কেন্দ্র, রেস্টুরেন্টে সরাসরি বিকাশ পেমেন্টে অফার-ডিসকাউন্টও দেখে নেওয়া যায় বিকাশ থেকে।
বিকাশ পেমেন্টে ই-টিকিটিং ও হোটেল
বুকিং সম্পর্কিত অফারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে– https://www.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ রমণ র ব ক কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও তার যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে সাম্প্রতিক বহিস্কৃত দশ নেতাকে সপদে বহালের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক বহিস্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন দলের অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা। মামলার শুনানি শেষে গত বুধবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল বারী বলেন, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জিএম কাদের ও দলের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক সব কার্যক্রম পরিচালনায় অস্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জিএম কাদের যে ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছেন তাদের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ-পদবি ফিরিয়ে দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
‘নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না বলে জিএম কাদেরবিহীন জাপা গঠনের চেষ্টা চলছে’
এই সরকারের সংস্কার কেউ গ্রহণ করছে না: জিএম কাদের
আদালতের আদেশে এখন থেকে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, দপ্তর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ (চট্টগ্রাম), নাজমা আকতার (ফেনী), মো. জহিরুল ইসলাম জহির (টাঙ্গাইল), মোস্তফা আল মাহমুদ (জামালপুর), জসীম উদ্দিন (নেত্রকোনা) ও আরিফুর রহমান খান (গাজীপুর) সপদে বহাল থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
মামলার আদেশে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এ রায় প্রমাণ করে দিয়েছে, আইন ও ন্যায়বিচার এখনো জীবিত। সত্যকে নিশ্চিহ্ন করা যায় না এবং দলীয় গঠনতন্ত্রকে পায়ের নিচে ফেলা যায় না। স্বৈরতন্ত্র, দলীয় কর্তৃত্ববাদ এবং অবৈধ ক্ষমতা দখলের রাজনীতির বিরুদ্ধে এটি একটি কঠোর বার্তা।”
তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি কখনোই একক ব্যক্তির মালিকানাধীন সংগঠন নয়। এটি দেশের লাখো মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম।আজ আদালতের রায়ে সেই প্ল্যাটফর্ম আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরেছে।”
“আমরা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করি এবং দেশবাসী ও জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।”
এ রায়ে সত্যের জয় ও অসত্য-অহঙ্কারের পরাজয় হয়েছে মন্তব্য করে হাওলাদার বলেন, “এখন পার্টির সকল স্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে পল্লীবন্ধু এরশাদের স্বপ্নের জাতীয় পার্টি গড়ে তুলব। আমাদের মধ্যে আর কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। আমরা সবাই প্রয়াত এরশাদের সৈনিক হিসেবে জাতীয় পার্টির জন্য নিবেদিত হয়ে একটি সাম্য প্রগতি ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করব।”
মামলার আদেশের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির বর্তমান মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “আমরা আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত আদালত পার্টির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদকের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, আশা করি তারা সেটা মান্য করবেন। আমাদের বিশ্বাস, আমরা ন্যায়বিচার পাব। আমরা এ বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলা করব।”
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দলটির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম বলেন, “আমাকেও তারা আসামি করেছেন। আমি তো পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত প্রস্তুত করে পাঠিয়ে থাকি। মাত্র কয়েকদিনের জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আশা করি আমরা আবারো সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফিরতে পারব।”
কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব নিয়ে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় দলের বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের। একপর্যায়ে তারা দলের চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে গত ২৮ জুন দলের জাতীয় কাউন্সিলে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে পৃথক প্যানেল দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে দলীয় কাউন্সিল বাতিল করে দেন জিএম কাদের। এতে আনিস, হাওলাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাড়ে জিএম কাদেরের। জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ঘোষিত সময়ে কাউন্সিল ডাকার আহ্বান জানিয়ে একাধিক বিবৃতি দেন নেতারা। পাল্টা বিবৃতি ও জেলা নেতাদের ডেকে মতামত নিয়ে এমনকি তড়িঘড়ি করে প্রেসিডিয়ামের সভা ডেকে জিএম কাদের দল থেকে অব্যাহতি দেন এসব নেতাদের। দল থেকে অব্যাহতির ঘটনা মেনে নেননি সিনিয়র নেতারা। বরং তারা জিএম কাদেরের এমন সিদ্ধান্তকে অবৈধ আখ্যায়িত করে আলাদা দলীয় কার্যাক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে দল ছেড়ে যাওয়া সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একমঞ্চে হাজিরও করেন তারা। পাশাপাশি জিএম কাদেরের বহিস্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ এবং তার দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। অবশেষে সেই মামলায় আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নেতাদের সপদে ফিরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে ২৮ জুন জিএম কাদের দলের গঠনতন্ত্রের ক্ষমতাবলে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুসহ ১০ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং জাতীয় পার্টির নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকেও তাদের নাম মুছে ফেলা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ