ফিক্সিংয়ের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমি বিব্রত, কষ্ট পাচ্ছি: বিজয়
Published: 1st, February 2025 GMT
চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফিক্সিংয়ে সন্দেহের তালিকায় আছেন এনামুল হক বিজয়। এমন সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার দুই দিনের মাথায় বিজয়ের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার সংবাদ প্রচারিত হতে থাকে।
এ ব্যাপারে কি প্রতিক্রিয়া বিজয়ের? দুর্দান্ত রাজশাহীকে প্রথম ৮ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার রাইজিংবিডির সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেন। এ সময় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, এ সব সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বিজয় স্পষ্টত বলেন, “(অভিযোগগুলো) মিথ্যা তো মিথ্যাই, এগুলো হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি বিব্রত, কষ্ট পাচ্ছি। এত বছর আল্লাহ দিলে (হৃদয়ে ধারণ করে) ক্রিকেট খেলছি, বিপিএল সম্মানের সাথে খেলছি, সাথে বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করছি। এখনও তো অনেক সময় পড়ে আছে। বাংলাদেশ দলকে বারবার প্রতিনিধিত্ব করতে চাই, না হলে পরিশ্রমের দরকার কি। এনসিএল, বিপিএল, প্রিমিয়ার লীগ জান দিয়ে খেলে খেলে যদি এই ধরণের কথা শুনতে হয় কষ্ট তো লাগবেই।”
আরো পড়ুন:
ফিক্সিংয়ের সংবাদ নিয়ে মিথুন
আমার সম্মান নিয়ে কেউ খেলবে, এটা কখনো ছাড় দেই না
তানজীমের দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল হচ্ছে না
“আমি যেটাই দেখতেছি খুবই অবাক হচ্ছি এবং কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের মিডিয়া যে একটা মানুষকে হেয় করে কি মজা পাচ্ছে ভিউয়ের জন্য! সবার তো পরিবার আছে, বন্ধু আছে কত মানুষ দেখে তাদের, ভক্ত, অনুসারিদের কথা বাদই দিলাম, কাছের মানুষ স্ত্রী আছে বাচ্চা আছে। এই সংবাদগুলো করে আসলে কি মজা পাচ্ছে?”-আরও যোগ করেন বিজয়।
রাজশাহীর হয়ে ১২ ম্যাচে ৩৯২ রান করেছেন। সেঞ্চুরিও আছে একটি। তাকে চাপমুক্ত রাখার জন্য শেষ দিকে নেতৃত্বে বদল আনে রাজশাহী। তার দল এখন অপেক্ষায় আছে প্লে অফের। এর মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফিক্সিং নিয়ে সংবাদ হতে থাকে। এ সব দেখার পর থেকে বিসিবির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তিনি। তার ভাষ্য, আকসু বা বিসিবি যে কোনো বিষয়ে যে কোনো ক্রিকেটারকে ডাকতে পারে, কথা বলতে পারে। তার মানে না যে অভিযোগ প্রমাণিত।
বিজয় বলেন, “এখন তাদের উদ্দেশ্য কি? এগুলো নিয়ে আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি যে, কেন তারা এগুলো আসলে করলো কোনো ধরনের সাক্ষী-প্রমান ছাড়া। মনে করেন, যে কাউকেই ডাকতে পারে বিসিবি, শুনতে পারে কি হয়েছে বা না হয়েছে বা যে কোনো মানুষের সঙ্গেই কথা বলতে পারে। এর মানে এই না যে, সে অপরাধী। দুনিয়াতে সবার সঙ্গে সবার আলোচনা হতেই পারে বা বিসিবি থেকেও কোনো কিছু আমাকে জানায়নি।”
বিসিবির কারও সাথে এই অস্বস্তিকর ব্যাপারগুলো নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিজয় বলেন, “আমি ফাহিম স্যারের সঙ্গে কথা বললাম, যে এরকম নিউজ আসছে। কারণটা কি? আমার অপরাধটা কি বা আমি কারও ক্ষতি করছি কিনা কিংবা কি করলাম যে, এরকম নিউজগুলো আসছে? স্যার বললেন- ঠিক আছে আমি বিসিবিতে যাচ্ছি, দেখি কি করা যায়।”
এদিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার খবরও বিজয় দেখেছেন গণমাধ্যমে, “কেউ আমাকে কিছু জানালো না যে, দেশত্যাগ করতে পারবো না বা আমি এটার মধ্যে জড়িত। আমি আসলে দেখছি আর অবাক হচ্ছি যে, এগুলো কেনো হচ্ছে আসলে। খুবই কষ্ট পাচ্ছি।”
এ সব ষড়যন্ত্র নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারছে না বিজয়, “ষড়যন্ত্র নাকি কি এটা তো আসলে আমি বুঝতেই পারছি না। ষড়যন্ত্র নাকি ভিউয়ার চাচ্ছে, নাকি মজা নিচ্ছে, তাদের প্ল্যান আমি জানি না। আসলে কারা করাচ্ছে কেনই বা করছে, আমাকে বলতো যে, ভাই আমি এই কারণে করতেছি তাও আমি শুনতাম যে, কেন করতেছে। একদমই অবাক করা বিষয়।”
গণমাধ্যমে এ সব দেখার পর আইনি পথে হাটার কথা জানিয়েছেন বিজয়, “শুক্র-শনি তো বন্ধ ছিলো, আমি যে কোনো লিগ্যাল অ্যাকশন নিবো সেটার তো সুযোগ ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতে নিউজগুলো শুরু হয়। এখন তো রবিবার অর্থাৎ কাল পর্যন্ত ওয়েট করা লাগতেছে। আর আমি যাচ্ছি, আইনজীবির সঙ্গে কথা হবে। একটা বড় স্টেপ তো আমি নিবোই। কারণ যেভাবে নেগেটিভ নিউজ হয়েছে, একে পজিটিভ করা অনেক ডিফিকাল্ট। কারণ, মানুষ নেগেটিভটাই পছন্দ করে শুনতে। সেক্ষেত্রে আমার থেকে ক্লিয়ার করা জরুরী। যে ব্যাপারটা কেমন আমি কত কষ্ট পাচ্ছি বা কি হচ্ছে।”
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।