চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফিক্সিংয়ে সন্দেহের তালিকায় আছেন এনামুল হক বিজয়। এমন সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার দুই দিনের মাথায় বিজয়ের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার সংবাদ প্রচারিত হতে থাকে। 

এ ব্যাপারে কি প্রতিক্রিয়া বিজয়ের? দুর্দান্ত রাজশাহীকে প্রথম ৮ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার রাইজিংবিডির সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেন। এ সময় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, এ সব সম্পূর্ণ মিথ্যা।

বিজয় স্পষ্টত বলেন, “(অভিযোগগুলো) মিথ্যা তো মিথ্যাই, এগুলো হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি বিব্রত, কষ্ট পাচ্ছি। এত বছর আল্লাহ দিলে (হৃদয়ে ধারণ করে) ক্রিকেট খেলছি, বিপিএল সম্মানের সাথে খেলছি, সাথে বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করছি। এখনও তো অনেক সময় পড়ে আছে। বাংলাদেশ দলকে বারবার প্রতিনিধিত্ব করতে চাই, না হলে পরিশ্রমের দরকার কি। এনসিএল, বিপিএল, প্রিমিয়ার লীগ জান দিয়ে খেলে খেলে যদি এই ধরণের কথা শুনতে হয় কষ্ট তো লাগবেই।”

আরো পড়ুন:

ফিক্সিংয়ের সংবাদ নিয়ে মিথুন 
আমার সম্মান নিয়ে কেউ খেলবে, এটা কখনো ছাড় দেই না

তানজীমের দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল হচ্ছে না

“আমি যেটাই দেখতেছি খুবই অবাক হচ্ছি এবং কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের মিডিয়া যে একটা মানুষকে হেয় করে কি মজা পাচ্ছে ভিউয়ের জন্য! সবার তো পরিবার আছে, বন্ধু আছে কত মানুষ দেখে তাদের, ভক্ত, অনুসারিদের কথা বাদই দিলাম, কাছের মানুষ স্ত্রী আছে বাচ্চা আছে। এই সংবাদগুলো করে আসলে কি মজা পাচ্ছে?”-আরও যোগ করেন বিজয়। 

রাজশাহীর হয়ে ১২ ম্যাচে ৩৯২ রান করেছেন। সেঞ্চুরিও আছে একটি। তাকে চাপমুক্ত রাখার জন্য শেষ দিকে নেতৃত্বে বদল আনে রাজশাহী। তার দল এখন অপেক্ষায় আছে প্লে অফের। এর মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফিক্সিং নিয়ে সংবাদ হতে থাকে। এ সব দেখার পর থেকে বিসিবির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তিনি। তার ভাষ্য, আকসু বা বিসিবি যে কোনো বিষয়ে যে কোনো ক্রিকেটারকে ডাকতে পারে, কথা বলতে পারে। তার মানে না যে অভিযোগ প্রমাণিত। 

বিজয় বলেন, “এখন তাদের উদ্দেশ্য কি? এগুলো নিয়ে আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি যে, কেন তারা এগুলো আসলে করলো কোনো ধরনের সাক্ষী-প্রমান ছাড়া। মনে করেন, যে কাউকেই ডাকতে পারে বিসিবি, শুনতে পারে কি হয়েছে বা না হয়েছে বা যে কোনো মানুষের সঙ্গেই কথা বলতে পারে। এর মানে এই না যে, সে অপরাধী। দুনিয়াতে সবার সঙ্গে সবার আলোচনা হতেই পারে বা বিসিবি থেকেও কোনো কিছু আমাকে জানায়নি।”

 

বিসিবির কারও সাথে এই অস্বস্তিকর ব্যাপারগুলো নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিজয় বলেন, “আমি ফাহিম স্যারের সঙ্গে কথা বললাম, যে এরকম নিউজ আসছে। কারণটা কি? আমার অপরাধটা কি বা আমি কারও ক্ষতি করছি কিনা কিংবা কি করলাম যে, এরকম নিউজগুলো আসছে? স্যার বললেন- ঠিক আছে আমি বিসিবিতে যাচ্ছি, দেখি কি করা যায়।”

এদিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার খবরও বিজয় দেখেছেন গণমাধ্যমে, “কেউ আমাকে কিছু জানালো না যে, দেশত্যাগ করতে পারবো না বা আমি এটার মধ্যে জড়িত। আমি আসলে দেখছি আর অবাক হচ্ছি যে, এগুলো কেনো হচ্ছে আসলে। খুবই কষ্ট পাচ্ছি।”

এ সব ষড়যন্ত্র নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারছে না বিজয়, “ষড়যন্ত্র নাকি কি এটা তো আসলে আমি বুঝতেই পারছি না। ষড়যন্ত্র নাকি ভিউয়ার চাচ্ছে, নাকি মজা নিচ্ছে, তাদের প্ল্যান আমি জানি না। আসলে কারা করাচ্ছে কেনই বা করছে, আমাকে বলতো যে, ভাই আমি এই কারণে করতেছি তাও আমি শুনতাম যে, কেন করতেছে। একদমই অবাক করা বিষয়।”

গণমাধ্যমে এ সব দেখার পর আইনি পথে হাটার কথা জানিয়েছেন বিজয়, “শুক্র-শনি তো বন্ধ ছিলো, আমি যে কোনো লিগ্যাল অ্যাকশন নিবো সেটার তো সুযোগ ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতে নিউজগুলো শুরু হয়। এখন তো রবিবার অর্থাৎ কাল পর্যন্ত ওয়েট করা লাগতেছে। আর আমি যাচ্ছি, আইনজীবির সঙ্গে কথা হবে। একটা বড় স্টেপ তো আমি নিবোই। কারণ যেভাবে নেগেটিভ নিউজ হয়েছে, একে পজিটিভ করা অনেক ডিফিকাল্ট। কারণ, মানুষ নেগেটিভটাই পছন্দ করে শুনতে। সেক্ষেত্রে আমার থেকে ক্লিয়ার করা জরুরী। যে ব্যাপারটা কেমন আমি কত কষ্ট পাচ্ছি বা কি হচ্ছে।”

ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র

কুমিল্লার মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম সরকারকে গ্রেপ্তার করেছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নে পীর কাশিমপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাহ আলম একই এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান। ডিবি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, প্রাথমিক তদন্তে ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা মেলায় শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই তিন খুনের মামলায় এজাহারনামীয় আসামি।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর আর স্বীকারোক্তি দেননি ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’০৬ জুলাই ২০২৫

তবে শাহ আলম ওই মামলার প্রকৃত আসামি নন বলে দাবি করেছেন তাঁর ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ সরকার। তিনি বলেন, ‘ডিবি পুলিশ বলছে, আমার বাবাকে ট্রিপল মার্ডার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তিনি এজাহারনামীয় আসামি। তবে এ মামলার এজাহারের ২৫ নম্বরে থাকা শাহ আলম নামের আসামির বয়স ৪০ বছর। আর আমার বাবার বয়স ৭০ বছরের বেশি। এ ছাড়া আমার দাদার নাম জানেন না, এলাকায় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাহলে আসামির পিতার নাম অজ্ঞাত রাখা হলো কেন? এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমার বাবাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য এই মামলায় গ্রেপ্তার করানো হয়েছে।’

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিনও বিষয়টি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে শুনিনি তিনি (শাহ আলম) এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া ঘটনার সময় বা আগে-পরের কোনো সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা যায়নি। আমার মনে হয়, কোথাও ভুল হচ্ছে। তাঁকে অযথা গ্রেপ্তার করে বৃদ্ধ বয়সে হয়রানি করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুনকুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার মামলায় আরও ৬ জন গ্রেপ্তার০৫ জুলাই ২০২৫

ঘটনার সময় শাহ আলম ঘটনাস্থলে ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী রিক্তা আক্তার। আজ সকালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় পীর কাশিমপুরের শাহ আলম নামের একজন জড়িত বলে যখন জানতে পেরেছি, তখন মামলায় নামটি উল্লেখ করেছি। পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি বলে আমি মামলাতে আসামির বাবার নাম অজ্ঞাত রেখেছি। ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। আমি কাউকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করতে চাই না। ডিবি পুলিশের তদন্তে যদি তিনি ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে গ্রেপ্তার করুক; না হলে, আমি চাই না কোনো নিরীহ মানুষের হয়রানি হোক।’

ঘটনার প্রায় এক মাস পার হলেও প্রধান আসামি শিমুল বিল্লাহ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্ষোভ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিক্তা। তিনি বলেন, ‘শিমুল গ্রেপ্তার না হলে যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হতে পারে, আমাকে হত্যাও করতে পারে। আমি দ্রুত তার গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুনকুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর মামলা, আটক ২০৫ জুলাই ২০২৫

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে শাহ আলমের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলাটির মোট ১০ আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৯ আসামি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। নতুন করে গ্রেপ্তার শাহ আলমকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা, ছেলেমেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ওই গ্রামের রোকসানা বেগম (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার (২৯)। পরদিন রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। ওই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আকুবপুর ইউপির চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। তিনি পলাতক আছেন।

আরও পড়ুনমুঠোফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খেপিয়ে তোলা হয় এলাকাবাসীকে০৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনকুমিল্লায় মাদক বেচাকেনার অভিযোগে মা ও দুই সন্তানকে গণপিটুনি, কুপিয়ে হত্যা০৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনস্থানীয় ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় মুরাদনগরে ‘মব’ সৃষ্টি করে তিনজনকে হত্যা০৫ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার
  • ভেনেজুয়েলায় নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিরোধীদের প্রতিরোধের ডাক
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র