মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সোমালিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলা সংক্রান্ত একজন জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনারী ও অন্যান্যদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। গতকাল শনিবার এই হামলা চালানো হয়।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্ট করে এই খবর জানিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আলোচনার পর ছয় মার্কিন নাগরিক মুক্ত

যুক্তরাষ্ট্রে জনবহুল এলাকায় বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা

ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে বলেন, “এসব হত্যাকারীরা গুহায় লুকিয়ে থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্রদের হুমকি দিচ্ছে। মার্কিন বিমান হামলা লুকিয়ে থাকার গুহাগুলোকে ধ্বংস করেছে, সেই সঙ্গে বেসামরিক মানুষদের ক্ষয়ক্ষতি না করেই লুকিয়ে থাকা অনেক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।” 

পোস্টে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প আরো বলেন, “আইএসআইএস এবং অন্য যারা আমেরিকানদের আক্রমণ করবে তাদের প্রতি বার্তা হলো যে, আমরা তোমাদের খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব!”

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে, সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা দেশের উত্তরাঞ্চলে সিনিয়র আইএস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে মার্কিন হামলার বিষয়ে অবহিত হয়েছে।

পোস্টে সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অটল সমর্থনকে স্বীকার করেন এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচারক্ষমতাসম্পন্ন নেতৃত্বে স্বাগত জানান।

পোস্টটিতে আরো বলা হয়েছে, সর্বশেষ মার্কিন অভিযানটি চরমপন্থি হুমকি মোকাবেলায় সোমালিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।

এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, “আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়নে মনে করা হচ্ছে, সোমালিয়ায় বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে বেসামরিক কারো কোনো ক্ষতি হয়নি।

সোমালিয়ার উত্তরাঞ্চলের গোলিস পার্বত্য এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানান পিট হেগসেথ।

মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষত ইরাক ও সিরিয়ায় গত দশকে আইএসের উত্থান হয়। তবে এখন আফ্রিকার কিছু অংশে নিষিদ্ধ এ সংগঠনের বিস্তার ঘটেছে।

আইএসের সোমালিয়া শাখা গঠিত হয় ২০১৫ সালে। আল–কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আল–শাবাব গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে এসে কয়েকজন আইএসের সোমালিয়া শাখা গড়ে তোলেন। আল–শাবাব সোমালিয়ার সবচেয়ে বড় জিহাদি গোষ্ঠী।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করবেন শারা

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল–শারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন সফর করবেন। গতকাল শনিবার দামেস্কে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত টম ব্যারাক এ ঘোষণা দেন। এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম সফর।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ১০ নভেম্বরের দিকে এ সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে।

গতকাল বাহরাইনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতিবিষয়ক সম্মেলন ‘মানামা ডায়ালগ’-এর ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টম ব্যারাক। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, শারার এ সফরে সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসলামিক স্টেটবিরোধী জোটে যোগ দেবে।

আরও পড়ুনযে মার্কিন জেনারেল একদিন গ্রেপ্তার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে সাক্ষাৎকার দিলেন আল-শারা২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ বিষয়ে অবগত এক সিরীয় সূত্র জানায়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে শারা ওয়াশিংটন সফরে যেতে পারেন।

কোন কোন বিদেশি নেতা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, তার একটি ঐতিহাসিক তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে সংরক্ষিত আছে। সে তালিকায় দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াশিংটন সফর করেননি। গত সেপ্টেম্বরে শারা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।

গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।

ব্যারাক বলেন, ওয়াশিংটনের লক্ষ্য হলো ২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাতে সিরিয়াকে যুক্ত করা। আইএস তাদের উত্থানের সময় ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সিরিয়া ও ইরাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখল করে রেখেছিল।

ব্যারাক বলেন, ‘আমরা সবাইকে এ জোটের অংশীদার করার চেষ্টা করছি, যা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

শারা একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে এক দশক আগে তাঁর নেতৃত্বাধীন আসাদবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই নেটওয়ার্ক থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং পরে আইএসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। আল–কায়েদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ওসামা বিন লাদেন।

আরও পড়ুনসিরিয়ার নেতা শারাকে গ্রেপ্তারে ১ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র২১ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা ২০১৯ সালে সিরিয়ায় আইএসের সবশেষ শক্ত ঘাঁটি দখলমুক্ত করে। তবে বিভিন্ন সূত্র গত জুনে রয়টার্সকে বলেছে, আইএস আসাদ সরকারের পতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিরিয়া ও প্রতিবেশী দেশ ইরাকে নতুন করে ফিরে আসার চেষ্টা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করবেন শারা