ইনিংসটা এভাবে শেষ হবে তা হয়তো ভাবতেই পারেননি তানজিদ হাসান তামিম। ‘নামকাওয়াস্তে’ স্পিনার বোসিস্তোর বাইরের বল কাট করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়। ক্যাচ দেন শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে।
৫৮ রানে তানজিদ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার পথে নিজের ব্যাট ছুঁড়ে মারেন। সাজঘরের এই পথ ধরার মধ্য দিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনার বিপিএলের যাত্রাও শেষ হলো। ৪৮৫ রান নিয়ে এবারের মিশন শেষ করলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার। ১২ ইনিংসে ৪৪.
আরো পড়ুন:
বিপিএলে নানা অনিয়ম, আসিফ মাহমুদের কড়া হুঁশিয়ারি
সেরা দুইয়ে থেকে প্রথম কোয়ালিফায়ারে চিটাগং কিংস
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড এখন তানজিদের। ছক্কার রেকর্ডে তানজিদের সামনে আছেন কেবল ক্রিস গেইল। ২০১৭ আসরে ১১ ম্যাচে ৪৭টি ছক্কা মেরেছিলেন ক্যারিবীয়ান তারকা। রংপুর রাইডার্সের জার্সিতে সেবার বিপিএলের সবগুলো ম্যাচ খেলেছিলেন গেইল। নিজের শেষ ইনিংসেও তানজিদ ৭ ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারলে আরো দুই/তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ হতো তার। সেটা হলে গেইলের রেকর্ডও হয়তো ছাড়িয়ে যেতে পারতেন তানজিদ।
তার এই একক নৈপূণ্য দলের কোনো কাজেই আসেনি। ঢাকা ১২ ম্যাচে মাত্র তিনটি জিতেছে। আলো ছড়িয়ে তানজিদ কেবল উজ্জ্বল হয়েছেন। তার ব্যাটের আলোয় জ্বলতে পারেনি ঢাকা।
একই অবস্থান তাসকিন আহমেদের। দুর্বার রাজশাহীর হয়ে এবারের বিপিএল খেলেছেন তাসকিন। ডানহাতি পেসার ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট পেয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। তার বোলিং গড় ১২.০৪, ইকোনমি ৬.৪৯। ১৯ রানে ৭ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও গড়েছেন দ্রুতগতির বোলার।
লিগের শুরুতে সাত ম্যাচে সহ অধিনায়ক ছিলেন তাসকিন। পরবর্তীতে ফ্র্যাঞ্চাইজি অধিনায়ক হিসেবে তাসকিনকে বেছে নেয়। নিজের শেষ পাঁচ ম্যাচে চারটিতে দলকে জিতিয়ে প্লে অফের লড়াইয়ে রেখেছিলেন তাসকিন। কিন্তু রান রেটের ম্যাড়প্যাচে খুলনা তাদের টপকে যায়। তাতে তাসকিনের বিপিএল যাত্রা থেমে যায় রাউন্ড রবিন লিগেই। ২০১৯ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। তাসকিন এবার সেই রেকর্ড ভেঙে গেছেন চূড়ায়।
ব্যাট-বলে তানজিদ ও তাসকিন এখন পর্যন্ত বিপিএলে সেরা। শেষ চার ম্যাচে তারা কেউই নেই। তবে নিশ্চিতভাবে আলোচনায় থাকবেন। কেননা আলো ছড়িয়ে উজ্জ্বল তারা।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ব প এল র কর ড উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।