মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তিন বাণিজ্যিক অংশীদার- চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা সকল পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার নিয়ে মার্কিন উদ্বেগের সমাধান না করলে ট্রাম্প আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি আগেই দিয়েছিলেন।

আরো পড়ুন:

আইএসকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আলোচনার পর ছয় মার্কিন নাগরিক মুক্ত

কানাডা এবং মেক্সিকো উভয় দেশই বলেছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশগুলো প্রতিশোধ নিলে তিনি শুল্কের পরিমাণ আরো বাড়াবেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলেছে, “শুল্ক আরোপের আজকের ঘোষণাটি যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ওষুধের বন্যা বন্ধ করার লক্ষ্যে চীন, মেক্সিকো ও কানাডাকে জবাবদিহি করতে প্রয়োজনীয়।”

ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ’ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে বলেন, “আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের অধীনে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসী ও ফেন্টানাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।”

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, শুল্ক আরোপের বিষয়টিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বৃদ্ধি, চাকরির বাজার রক্ষা ও রাজস্ব বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবেও মনে করেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম দেশটির অপরাধমূলক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টতার মার্কিন অভিযোগকে ‘অপবাদ’ বলে অভিহিত করেছেন।

হোয়াইট হাউজ মেক্সিকোর সরকারের বিরুদ্ধে মেক্সিকান মাদক পাচারকারী সংগঠনগুলোর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে, দেশটিতে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ দমন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আরো বেশি কিছু করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। 

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের দাবি, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয় না বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।

তিনি তার অর্থনীতি মন্ত্রীকে শুল্ক ও অ-শুল্ক ব্যবস্থার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে মেক্সিকো।

এদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তার দেশও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। 

শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, “আমরা কানাডিয়ানদের পক্ষে দাঁড়াতে পিছপা হব না। মঙ্গলবার থেকে তার সরকার মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।”

চীন এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা মার্কিন শুল্ক আরোপের ঘটনায় তীব্র অসন্তুষ্ট এবং এর ‘দৃঢ় বিরোধিতা’ করে।

বেইজিং আরো বলেছে, তারা ‘ভুল পদক্ষেপের’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে মামলা দায়ের করবে এবং ‘নিজস্ব অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য’ পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুল্ক ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের এসব পদক্ষেপের ফলে গাড়ি, কাঠ এবং ইস্পাত থেকে শুরু করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, অ্যাভোকাডো ও টমেটোর মতো খাবার, অ্যালকোহল পর্যন্ত অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প ক শ ল ক আর প র পদক ষ প

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ