গত কয়েক বছর ধরে বক্স অফিসে ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়েই একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে যাচ্ছেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার। তার অভিনীত ‘স্কাই ফোর্স’ সিনেমা গত ২৪ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে। সন্দীপ কেলওয়ানি নির্মিত সিনেমাটি বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলেছে। দীর্ঘ ছয় বছর পর সেঞ্চুরি করেছে অক্ষয়ের কোনো সিনেমা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ‘স্কাই ফোর্স’ টিম একটি পোস্টার প্রকাশ করে জানিয়েছে, সিনেমাটি মুক্তির দ্বিতীয় শুক্রবার পর্যন্ত শুধু ভারতে টিকিট বিক্রি থেকে মোট আয় হয়েছে ১০৪.
ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৬ বছর পর অক্ষয়ের কোনো সিনেমা শতকোটি রুপি আয় করেছে। তার অভিনীত ‘গুড নিউজ’ সিনেমা ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। কারিনা কাপুর খান, কিয়ারা আদভানি অভিনীত সিনেমাটির আয় শতকোটির ক্লাব পেরিয়ে যায়। এরপর আর কোনো সিনেমা শতকোটি রুপি আয় করতে পারেনি। যে কটি সিনেমা শতকোটির বেশি আয় করেছে, সেসব সিনেমায় অতিথি চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।
আরো পড়ুন:
বিদ্যার সঙ্গে চর্চিত চুম্বন দৃশ্য নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রতীক
অভিনেত্রী থেকে সন্ন্যাসিনী, মমতাকে ঘিরে আখড়ায় জটিলতা
২০১৯ সাল থেকে অক্ষয় কুমারের সিনেমার তালিকা এবং তাদের নিট বক্স অফিস আয় (সূত্র: স্যাকনিল্ক)
১. গুড নিউজ (২০১৯): ২০৫.০৯ কোটি রুপি
২. বেল বটম (২০২১): ৩৩.৩১ কোটি রুপি
৩. বচ্চন পাণ্ডে (২০২১): ৫১.০৪ কোটি রুপি
৪. সম্রাট পৃথ্বীরাজ (২০২১ ): ৬৮.২৫ কোটি রুপি
৫. রক্ষা বন্ধন (২০২২): ৪৮.৬৩ কোটি রুপি
৬. রাম সেতু (২০২২): ৭৪.৭ কোটি রুপি
৭. সেলফি (২০২৩): ১৭.০৩ কোটি রুপি
৮. মিশন রানিগঞ্জ (২০২৩): ৩৪.১৭ কোটি রুপি
৯. বড় মিয়া ছোট মিয়া (২০২৪): ৬৫.৯৬ কোটি রুপি
১০. সারফিরা (২০২৪): ২৪.৮৫ কোটি রুপি
১১. খেল খেল ম্যায় (২০২৪): ৩৯.২৯ কোটি রুপি
অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘স্কাই ফোর্স’ চলতি বছরের বলিউডের অন্যতম প্রতীক্ষিত সিনেমা। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান বিমান যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন অমর কৌশিক ও দীনেশ বিজন। ১৪০ কোটি রুপি বাজেটের এ সিনেমায় অক্ষয় ছাড়াও অভিনয় করেছেন নিমরাত কৌর, সারা আলী খান।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র শতক ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীর গবেষণাপত্রের অংশ অনুমতি না নিয়ে প্রকাশের অভিযোগ, শিক্ষক বলছেন ‘ভিত্তিহীন’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে তাঁর আগের কর্মস্থলের এক শিক্ষার্থীর তৈরি করা গবেষণাপত্রের অংশ নিজের নামে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
লিখিত অভিযোগ দেওয়া ওই সাবেক শিক্ষার্থীর নাম রিফাত সুলতানা। তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ফেনী শহরের বাসিন্দা এবং সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন ইসরাত জাহান। ওই সময়ের শিক্ষার্থী রিফাত সুলতানার থিসিসের সুপারভাইজার ছিলেন তিনি। প্রায় আড়াই বছর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ইসরাত জাহান।
জানতে চাইলে ইসরাত জাহান মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেই শিক্ষার্থী আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে, কখনো ভাবিনি। আমার সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং সে নিজেই একাধিকবার আমার সঙ্গে যৌথভাবে জার্নাল প্রকাশের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি দীর্ঘদিন তাকে পড়িয়েছি, আমিই তাকে সব সময় উৎসাহিত করেছি থিসিসে। কিন্তু অভিযোগে এবং গণমাধ্যমে সে যেসব কথা বলেছে, তার সবই ভিত্তিহীন। আমি তার সঙ্গে অসংখ্যবার আলোচনা করেই জার্নালে প্রবন্ধ জমা দিয়েছি। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কেন সে অভিযোগ করল, এটাই বুঝতে পারছি না।’
২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ইসরাত জাহানের অধীন রিফাত সুলতানা একটি থিসিস করেন। যার শিরোনাম ‘সাবজুগেশন, মার্জিনালাইজেশন অ্যান্ড ডাবল কলোনিজেশন: আ রিডিং অব দ্য অবরোধবাসিনী, দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস অ্যান্ড দ্য গড অব স্মল থিংস’। ওই থিসিসের বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে গত ৩১ ডিসেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস’ জার্নালে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স: আ কোয়েস্ট ফর সেলফ ইন শশী দেশপান্ডে’স দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন ইসরাত জাহান। এই প্রবন্ধে রিফাত সুলতানাকে দ্বিতীয় লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এরপর গত ১৩ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ পাঠান রিফাত সুলতানা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রিফাত সুলতানা অভিযোগ করেন, ইসরাত জাহান তাঁর অনুমতি ছাড়া এমএ থিসিসের ৩ নম্বর অধ্যায় থেকে সরাসরি অনুলিপি করেছেন। এ ছাড়া থিসিসের অন্যান্য অংশও, যেমন ৬ জানুয়ারি ২০১৯ এবং ২৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখে পাঠানো থিসিসের খসড়া নমুনা এবং থিসিস প্রেজেন্টেশন থেকেও তিনি উদ্ধৃতি এবং প্যারাফ্রেজিং ব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া ইসরাত জাহান থিসিসের মৌলিক লেখকের নাম প্রকাশে তাঁর সম্মতি নেননি। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরাত জাহান তাঁর মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ব্যস্ততার কারণে ধরতে পারেননি। এরপর তাঁর সঙ্গে শিক্ষকের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রিফাত সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গত ২২ এপ্রিল আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তবে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তদন্ত কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন আমার অভিযোগের তদন্ত না করে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে তারা। তদন্ত কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেছে।’
তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাঁদের মত চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন উল্লেখ করে রিফাত সুলতানা আরও বলেন, ‘তাঁরা মনে করেন, থিসিস থেকে শিক্ষার্থী এবং সুপারভাইজার দুজনেই নাকি একক লেখক হিসেবে গবেষণা আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন এবং কোনো সুপারভাইজার চাইলেই শিক্ষার্থীর থিসিস থেকে প্রথম লেখক হিসেবে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে থিসিসকারী শিক্ষার্থী অনুমতি না নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করাকে তাঁরা অন্যায় বলে মনে করেন না।’
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট কথাবার্তা। ইসরাত জাহান এই গবেষণা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার সুবিধা নেননি। এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কারণ, পূর্বের প্রতিষ্ঠানে এটি তাঁদের যৌথ কাজ ছিল। ইসরাত যে গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করেছেন, সেখানে তিনি শিক্ষার্থীর নামও দিয়েছেন। এরপরও আমাদের কাছে অভিযোগ করায় আমরা এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং অভিযোগকারীর কাছ থেকে বিস্তারিত জানান চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’