শেফিল্ডের জার্সিতে নেমেই ম্যাচসেরা হামজা
Published: 2nd, February 2025 GMT
বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে থেকে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের তুমুল আগ্রহের জায়গায় স্থান পায় ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবল। সেই সময়ের সেরা ‘সিরি-আ’ থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তো ছিল তাদের নখদর্পণে। লা-লিগা, বুন্দেসলিগা এমনকি ডাচ এরিডিভিজিরও খোঁজ রাখত তারা। কালের পরিক্রমায় ইন্টারনেট হাতের তালুতে চলে এসেছে। এখন তো তরুণ সমাজের আড্ডাতেই ঢুকতে পারেন না ইউরোপিয়ান ফুটবল সম্পর্কে অজ্ঞ কেউ। তারপরও এতোকাল কেউ ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লিগ ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের খোঁজ রাখেনি খুব একটা। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে এই লিগে খেলা শেফিল্ড ইউনাইটেড বাংলাদেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রে। ক্লাবটিতে যে খেলেন হামজা চৌধুরী!
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার আগামী মার্চে বাংলাদেশে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হওয়াটা চূড়ান্তই বলা যায়। দিন কয়েক আগেই প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটি ছেড়ে শেফিল্ডে যোগ দিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) হামজার শেফিল্ড অভিষেকটা হলো- ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ এর মতই। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচটিতে ডার্বি কাউন্টিকে ১–০ গোলে হারিয়েছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। নজর কাড়া পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা জুটিয়ে ফেলেছেন হামজা।
এই মৌসুমে লেস্টারে বেশিরভাগ সময়ই হামজাকে বেঞ্চে থাকতে হয়েছে। বদলি হিসেবে কিছু ম্যাচে সুযোগ পেলেও ধুঁকতে থাকা লেস্টার সন্তষ্ট ছিল না। তবে শেফিল্ডের কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার শুরু থেকেই হামজার উপর আস্থা রেখলেন। গোটা ৯০ মিনিট রক্ষণভাগের দায়িত্ব পালন করে এবং সতীর্থদের জন্য বলের যোগান দিয়ে হামজা তার প্রতিদান দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
বাটলারের আগ্রহ নেই বিদ্রোহীদের নিয়ে
সান্তোসে আবেগী প্রত্যাবর্তন নেইমারের
গোল না পেলেও পারফরম্যান্সের পর ম্যাচসেরার পুরস্কারের সবচেয়ে বড় দাবিদার হামজাই ছিলেন। গোটা ম্যাচে ৬১ বার বল স্পর্শ করেছেন। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হলেও ড্রিবলিংয়ে ছিলেন শতভাগ সফল। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ৩ বার বল কেড়ে নিয়েছেন এবং ২ বার সরাসরি ইন্টারসেপশন করেছেন। ডার্বি কাউন্টির কোনো খেলোয়াড়ই হামজাকে ট্যাকল বা ড্রিবল করতে পারেনি।
ম্যাচ শেষে হামজাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে শেফিল্ড ইউনাইটেডের কোচ ওয়াইল্ডার বলেন, “হামজা ওর মতোই খেলেছে। আমি ভেবেছিলাম ৭০ মিনিটের পরেই তুলে নিব। তবে ও এতটা ভালো খেলছিল যে আমাকে সেই সিদ্ধান্ত আর নিতে হয়নি।”
শেফিল্ডের পরবর্তী ম্যাচ ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে পোর্টসমাউথের বিপক্ষে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম
চট্টগ্রাম টেস্টে আজ প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেনতাইজুল ইসলাম। টেস্টে এ নিয়ে ১৬তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাইজুলের প্রশংসা করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন তামিম ইকবাল।
আরও পড়ুনতাইজুলের মনে হয় না তারা খেলা বোঝে১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের পেজে তাইজুলের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত (আন্ডাররেটেড) বোলার। এখন খেলা অন্য বোলারদের পরিসংখ্যান দেখুন, তাহলে আমার কথাটা বুঝতে পারবেন। আরেকবার ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ খেলেছ তাইজুল।’
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ও ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেক তাইজুলের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ২০১৯ সালে। ওয়ানডে (২০) ও টি-টোয়েন্টির (২) চেয়ে টেস্ট ম্যাচই (৫২) বেশি খেলেন তাইজুল। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে প্রথম দিনের পারফরম্যান্সসহ মোট ৫৩ টেস্টে এ পর্যন্ত ২২৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তাঁর টেস্ট সংস্করণের পারফরম্যান্সটা যাচাই করে দেখা যায়।
এখনো যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের। অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের সময় থেকে লায়নের পারফরম্যান্স— ১০৩ টেস্টে ২৯.৪৮ গড়ে ৪৪১ উইকেট। মোট ২৪ বার ৫ উইকেট নিলেও তাইজুলের অভিষেকের পর থেকে ১৯ বার ৫ উইকেট নেন লায়ন। তবে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলায় লায়ন এ সময়ে তাইজুলের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বোলিং গড় এবং স্ট্রাইকরেটে লায়ন ও তাইজুলের মাঝে ব্যবধান বেশি না। তাইজুলের বোলিং গড় ৩১.৫৬, স্ট্রাইক রেট ৬১.৯, যেখানে লায়নের স্ট্রাইকরেট ৬১.৬ ও গড় ৩০.১৯।
আরও পড়ুনতাইজুলের ভেলকি, শেষ সেশনে গেল ৭ উইকেট২ ঘণ্টা আগেভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন। টেস্টে তার অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেক থেকে এই সংস্করণে ৮৫ ম্যাচে ২২.৮৪ গড়ে ৪৩০ উইকেট নেন অশ্বিন। এ সময়ে ২৮ বার পেয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও বেশি বেশি টেস্ট খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে তাইজুলের তুলনায় বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন।
ভারতের আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। তাইজুলের অভিষেকের দুই বছর আগে টেস্টে অভিষেক জাদেজার। তাইজুলের অভিষেকের সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ টেস্টে ২৭৮ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। তবে তাঁর চেয়ে এ সময়ে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। জাদেজা এ সময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার, তাইজুল নিয়েছেন ১৬ বার।
তাইজুল ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক নাজমুল