অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনালের মধ্য দিয়ে মৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান ফরম্যাটের। অনেক সমালোচনা সত্ত্বেও টেস্ট ক্রিকেটকে দুই স্তরে (টু-টায়ার) ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে আইসিসি। আগামী জুনে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের আগেই দ্বিস্তর কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’।

সম্প্রতি আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ ও ইসিবি (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন বৈঠকে বসেছিলেন। থম্পসন আবার আইসিসির স্ট্র্যাটেজিক গ্রোথ কমিটির প্রধান। বৈঠকে তারা দু’জন টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার লক্ষ্যে দ্বিস্তর কাঠামো চূড়ান্ত করেছেন। ইংল্যান্ডের গণমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’-এর কাছে বিষয়টি স্বীকারও করেছেন থম্পসন। 

আগামী ২০ জুন থেকে হেডিংলিতে শুরু হতে যাওয়া ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট সিরিজ দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন সাইকেল শুরু হচ্ছে। দ্বিস্তর চালুর পক্ষে তাঁর যুক্তি, ‘যতটা কার্যকর হওয়া উচিত ছিল, টেস্ট ক্রিকেটের বর্তমান কাঠামোতেই সেটা হয়নি। তাই টেস্টে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ন্যায্যতা খুঁজতে হচ্ছে আমাদের। আমাদের হাতে আরও পাঁচ মাসের মতো সময় আছে। আশা করছি, টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে পারব। এই পরিবর্তনের ফলে সেরা দলগুলোর ফাইনালে পৌঁছার নিশ্চয়তার পাশাপাশি প্রকৃত অর্থে টেস্ট খেলতে আগ্রহী জাতিগুলোকে উৎসাহিত করবে।’ 

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান মডেলের মূল সমালোচনা হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব। দুই বছরের সাইকেলে এই মডেলেও সব দেশ সব দেশের বিপক্ষে খেলে না। আর বেশি বেশি দুই টেস্টের সিরিজের কারণে র‍্যাঙ্কিংও উল্টাপাল্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এসব যুক্তি তুলে ধরে দ্বিস্তর চালুর কথা বলা হচ্ছে। প্রথম স্তরে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা থাকবে। দ্বিতীয় স্তরে উইন্ডিজ, বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস স আরও প

এছাড়াও পড়ুন:

দোয়ার ফজিলত ও আদব

দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)

আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)

মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)

‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)

দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)

নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)

দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।

হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ