শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক সমকাল, নিউজ২৪, বাংলা টিভি ও দেশ টিভির প্রতিনিধির ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে সমকালের প্রতিনিধির শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করেছে তারা।

সোমবার দুপুর ১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত অবস্থায় সোহাগ খান সুজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি দৈনিক সমকাল পত্রিকার শরীয়তপুর প্রতিনিধি। এছাড়া অন্য তিন সাংবাদিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস এক রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে ফেলে দেন। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। অন্যদিকে নুরুজ্জামান শেখ নামে এক ক্লিনিক ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরিচয়ে ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে নামসর্বস্ব অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে নুরুজ্জামানের সঙ্গে সোহাগ খান সুজনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বাকবিতণ্ডা হয়।

সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার ক্লিনিক ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক পরিচয় দানকারী নুরুজ্জামান শেখ, তাঁর ভাই শামীম শেখসহ ১০/১২ জন মিলে ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালান। এসময় তাকে বাঁচাতে এলে নিউজ২৪ প্রতিনিধি বিধান মজুমদার, বাংলা টিভির প্রতিনিধি নয়ন দাস ও দেশ টিভির প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম আকাশের ওপর হামলা চালান তারা।

পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সুজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অন্য তিন সাংবাদিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে আমার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ। আজ অফিসে যাচ্ছিলাম। আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা নুরুজ্জামান শেখ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ওপর হামলা চালায়। আমি এই হামলার বিচার দাবি করছি।

নিউজ২৪ প্রতিনিধি বিধান মজুমদার বলেন, হঠাৎ করে দেখি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে নুরুজ্জামান শেখসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী সুজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে। আমরা বাঁচাতে গেলে আমাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শরীয়তপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আরটিভির শরীয়তপুর প্রতিনিধি আবুল হোসেন বলেন, সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ঘটনা শুনে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক প য় জখম স হ গ খ ন স জন সমক ল র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সংগঠনটির দেওয়া বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ডুজার সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান ছাত্রদলের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সরিয়ে নেওয়া, বিবৃতিতে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়নের মতো আচরণকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ডুজা।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে পাণ্ডুলিপিবিষয়ক কর্মশালা শুরু

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিইএ পরিচালকের সাক্ষাৎ

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে ‌‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন/ভাগ বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদকে ঘিরে একটি বিবৃতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু শব্দচয়ন করে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে নিউজ করার পরেও দু’একটি গণমাধ্যমের উপর ছাত্রদলের প্রভাব খাটিয়ে সংবাদ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বিবৃতিতে আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কেউ নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিকার চাইবেন। কিন্তু ছাত্রদলের এ ধরনের আচরণ আমাদের সে আকাঙ্ক্ষাকে আশাহত করেছে।

ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাগোনিউজ২৪.কম-এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে ‘সময়ের আলো’র স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ নামে একজন ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।

নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃক সাব্বির আহমেদের অপেশাদার ও অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা