কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদরের স্টেশন রোড এলাকায় দলটির পরিত্যক্ত ভবনের একটি ভাঙা দেয়ালে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে শেখ মুজিবের একটি ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ওই পরিত্যক্ত ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভবনটিতে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। ওই সময় থেকে ভবনটির ভাঙা ও ঝুলে থাকা দেয়ালের অংশে গতকাল ‘পাবলিক টয়লেট’ লেখা হয়েছে। পরে ভবনটির সামনে দাঁড়িয়ে এটিকে ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর খড়মপট্টি এলাকায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

গত বছরের ৪ আগস্ট আন্দোলনের সময় ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও আওয়ামী লীগের লোকজনের কয়েকটি বাড়ি ও স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ছয় মাস পর গতকাল রাতে আবারও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনের ভেতর আগুন দিয়ে দেয়ালে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেওয়া হয়। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ শাখার অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পাঁয়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন এবং শেখ মুজিবুরের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ গতক ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।

ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।

ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।

মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালু করতে তহবিল গঠন, ১০ লাখ টাকা দিল জামায়াত
  • কুয়ালালামপুরে পেট্রোনাস টাওয়ার ৩–এ আগুন
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত