এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী: তৌহিদ হোসেন
Published: 6th, February 2025 GMT
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী এপ্রিলে ঢাকা সফর করতে পারেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ধরে নিচ্ছি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফর করবেন। তবে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমি মনে করি না, এই সফর এপ্রিলের আগে হবে।’ তিনি আরও বলেন, উভয় পক্ষই (সফর সম্পর্কে) এটি নিয়ে কাজ করছে। এখনো সময় আছে এবং আমরা এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নেব।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিপূরণের বিষয়টি ঢাকা উত্থাপন করবে কি না, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ৫৩ বছর পরেও দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গেছে এবং আলোচনার সময় এই বিষয়গুলো উত্থাপন করা হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি এসব বিষয়ে স্থির থাকি, তাহলে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না। আমরা অবশ্যই আমাদের স্বার্থ রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করব; কিন্তু একই সময়ে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের মতোই দেখতে চাই। আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে দেখতে চাই না।’
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সমুদ্র যোগাযোগ ইতিমধ্যে আবার শুরু হয়েছে, যা ইতিবাচক অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনছে। আমরা এই সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছিল, যা কোনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।