মোহাম্মদপুরে আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার ৪ পুলিশ
Published: 7th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় আসামি ধরতে গিয়ে হামলায় চার পুলিশসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কিশোর গ্যাঙের ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার সন্ধ্যায় রায়েরবাজার বোটঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের কারও কারও মাথা ফেটেছে, হাতের রক্তনালি কেটে গেছে, কারও ভেঙেছে হাত।
আহতরা হলেন– মোহাম্মদপুর থানার এসআই আফজালুল হক, জসীম উদ্দীন, খোরশেদ আলম, এএসআই সোহেল রানা এবং সোর্স আল আমিন। তাদের মধ্যে আল আমিন বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, বোটঘাট এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মামলার আসামি ধরতে গেলে নারী-পুরুষ মিলে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এতে পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন।
হামলার পর রাতে রায়েরবাজার বোটঘাট এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাসদস্যরা যৌথ অভিযানে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গেলে তাদের ওপরও হামলা হয়। তখন এক কর্মকর্তা আহত হন।
জানা যায়, একাধিক হত্যা মামলার আসামি ও বোটঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং পাটালি গ্রুপের সদস্যরা মূল হোতা ফালানকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে পাটালি গ্রুপের ল্যাংড়া হাসান, ফরহাদ ও চিকু শাকিল। তাদের নেতৃত্বে গ্রুপের সদস্য পিচ্চি হাসান, স্বপন, শাহিন, ছোট্ট হাসান, সবিজ মুন্না, দিপু, সম্রাট, রফিক, রাকিব, রাসেলসহ ৩০ থেকে ৪০ জন হামলায় অংশ নেয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র এল ক য় সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে
তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা।
নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।
বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।
ঢাকা/শংকর/রফিক