ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েক দিনে সংঘটিত ঘটনাবলিকে দেশের জন্য ‘অশনিসংকেত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, যারা এই নৈরাজ্য সৃষ্টি করছেন এবং যারা নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত, তাদের থামাতে হবে। না হলে এটা দেশের জন্য অশনিসংকেত। এই অশনিসংকেত ও বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষার দায়িত্ব সরকারের।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (এমএল) সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আজকে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এর জন্য দায়ী একমাত্র শেখ হাসিনা। তিনি অতীতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছেন। আবার নতুন করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের বিচার না হলে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। তিনি ভারতে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করতে যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তার জন্য ভারত সরকারকেও জবাবদিহি করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের জেরে। ছয় মাস পার হলেও গণহত্যার জন্য তাঁর কণ্ঠে অনুশোচনা নেই। ১৬ বছরের অপরাধের জন্য তিনি কোনো ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। তাঁর বক্তব্যে কোনো অনুশোচনা, উপলব্ধির লেশমাত্র দেখা যায়নি। বরং তাঁর উসকানিতে পা দিয়ে যেসব ঘটনাবলি সংঘটিত হয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।
সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন। সম্মেলনের প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং দ্বিতীয় পর্বে কর্ম অধিবেশন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা থাকাকালে তাঁর ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের উল্টো যাত্রা ঘটল: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ (তিন শূন্য) তত্ত্ব সমর্থন করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে তার উল্টো যাত্রা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তাঁর খেয়াল করা দরকার। আমরা চাই, থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’
সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শিরোনামে যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও প্রথম আলো।
বৈঠকে অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের “থ্রি জিরো” (তিন শূন্য) তত্ত্ব সারা পৃথিবীতে পরিচিত। আমি এটা খুবই সমর্থন করি যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য দারিদ্র্য। কিন্তু পুরো যাত্রাটা তো হচ্ছে উল্টো দিকে। অধ্যাপক ইউনূসের একটা সুযোগ ছিল যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থ্রি জিরো তত্ত্বের বাস্তবায়নের একটা মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে দাঁড় করানোর কিছু চেষ্টা করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কীভাবে কার্বন নিঃসরণ আরও বাড়ে, সেটার একটা চেষ্টা চলছে। গত ১০ মাসে লক্ষাধিক বেকারত্ব বেড়েছে শুধু কারখানা বন্ধ করার কারণে আর দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তো তাঁর একটু খেয়াল করা দরকার। এতে তো আমরা খুশি না। আমরা তো চাই যে থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’
‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শীর্ষক গোলটেবিলে আলোচকদের একাংশ। সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে