সিলেট বিভাগে ১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে জামায়াত
Published: 9th, February 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কয়েক মাস ধরে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে ব্যাপকভাবে সভা-সমাবেশ করছেন। খেলাধুলা, ধর্মীয় ও সামাজিক নানা আয়োজনে যোগ দিয়েও তাঁরা কুশল বিনিময় করছেন। এমন অবস্থায় আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৯টি সংসদীয় আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দলটি ‘নির্বাচনী মাঠে’ নেমেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে গতকাল শনিবার সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো.
বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সিলেট অঞ্চলের পরিচালক এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। প্রার্থীদের মধ্যে সিলেট-১ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানানো হয়।
এ ছাড়া সিলেট-২ আসনে অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সিলেট-৩ আসনে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান আহমদ, সিলেট-৪ আসনে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সিলেট-৫ আসনে জেলার নায়েবে আমির আনোয়ার হোসেন খান ও সিলেট-৬ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের চারটি আসনে যেসব প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মৌলভীবাজার-১ আসনে আমিনুল ইসলাম, মৌলভীবাজার-২ আসনে জেলা আমির এম শাহেদ আলী, মৌলভীবাজার-৩ আসনে সাবেক জেলা আমির আবদুল মান্নান ও মৌলভীবাজার-৪ আসনে আবদুর রব।
সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি আসনেও প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ-১ আসনে সুনামগঞ্জ জেলার আমির তোফায়েল আহমেদ খান, সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে সিলেটের জজ কোর্টের এপিপি ইয়াছিন খান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে সুনামগঞ্জ জেলার নায়েবে আমির মুহাম্মদ শামসউদদীন ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনে গোবিন্দনগর ফাজিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস সালাম আল মাদানীকে প্রার্থী করা হয়েছে।
এ ছাড়া হবিগঞ্জ-১ আসনে সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী, হবিগঞ্জ-২ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের শুরা সদস্য শেখ জিল্লুর রহমান আজমী, হবিগঞ্জ-৩ আসনে হবিগঞ্জ জেলার সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমেদ ও হবিগঞ্জ-৪ আসনে হবিগঞ্জ জেলা আমির কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রার্থী হবেন বলে দলটি জানিয়েছে।
সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হিসেবে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারিও। তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন নেতৃত্ব চান তরুণ প্রজন্ম। জামায়াতও সেটি বিবেচনায় নিয়ে দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী নির্বাচন করেছে। আগে থেকেই যেন প্রার্থীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ গোছাতে পারেন এবং কর্মী-সমর্থকেরা সক্রিয় থাকতে পারেন, সেটা বিবেচনায় নিয়েই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ২ আসন ৩ আসন ৪ আসন ১ আসন
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?