শহর বা গ্রামের পাশাপাশি পৃথিবীর সব প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছে প্লাস্টিক। নানা ধরনের চেষ্টা করেও ঠেকানো যাচ্ছে না প্লাস্টিকের উপস্থিতি। সম্প্রতি অ্যান্টার্কটিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছেন ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (বিএএস) বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, অ্যান্টার্কটিকার গভীরে বরফের মধ্যে প্রথমবারের মতো মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব মাইক্রোপ্লাস্টিক স্থানীয় কোনো উৎস থেকে এসেছে।

হিমায়িত এলাকায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব বিজ্ঞানীদের কাছে এখনো অস্পষ্ট। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী কার্স্টি জোনস-উইলিয়ামস বলেন, ‘অ্যান্টার্কটিকায় প্রবেশের জন্য কঠোর নিয়মকানুন মানতে হয়। তারপরেও দূরবর্তী ও অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের প্রমাণ পেয়েছি আমরা। প্লাস্টিকের উপস্থিতি প্রমাণ করছে পৃথিবীর সব জায়গায় এখন প্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে।’

আরও পড়ুনঅ্যান্টার্কটিকায় বরফ আচ্ছাদিত হ্রদের নিচে জীবাণুর নতুন ইকোসিস্টেমের সন্ধান১৩ জানুয়ারি ২০২৫

ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের বিজ্ঞানীরা গবেষণার জন্য অ্যান্টার্কটিকার ইউনিয়ন হিমবাহ ও শানজ হিমবাহ এলাকা থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। এরপর ফিল্টার পেপারের মাধ্যমে নমুনাগুলো গলিয়ে স্ক্যান করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি লিটার তুষারে ৭৩ থেকে ৩০৯৯টি প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা রয়েছে। এসব কণার অধিকাংশ ৫০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী এমিলি রোল্যান্ডস বলেন, নতুন কৌশলের সাহায্যে আমরা এখন আগের তুলনায় অনেক ছোট আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছি।

আরও পড়ুনঅ্যান্টার্কটিকার বরফের রং বদলে যাচ্ছে, কেন০৯ জানুয়ারি ২০২৫

বিজ্ঞানী ক্ল্যারা মান্নো জানিয়েছেন, মানুষের পোশাকের পাশাপাশি ক্যাম্পের মধ্যে ও আশপাশে নিরাপদে পথ চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত দড়ি ও পতাকা থেকেও আসতে পারে প্লাস্টিকগুলো। অ্যান্টার্কটিকার মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের উৎস সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও গবেষণা করতে হবে। এই প্লাস্টিক দূষণ কমানোর কৌশলও খুঁজে বের করতে হবে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মন্তব্যে ভারতে ক্ষোভ, কী বলেছেন তিনি

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সাধারণত আলোচনার কেন্দ্রে আসেন না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন তিনি—শুধু পাকিস্তানে নয়, সীমানা পেরিয়ে ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন কূটনৈতিক কেন্দ্রেও।

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগে কাশ্মীর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন আসিম মুনির। তাঁর এসব মন্তব্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু তারা এটির একেক অংশ শাসন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে এ ভূখণ্ড।

জেনারেল মুনিরের বক্তব্য যদিও প্রত্যক্ষভাবে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তবু তাঁর বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এটিকে বেশি আগ্রাসী মনোভাবের হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, সরকারকে ক্ষমতায় বসানো ও অপসারণে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী নানা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে। এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী প্রতিবেশী এ দুই দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি।

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল মুনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁকে প্রকাশ্যে তেমন কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে তাঁর একটি বক্তব্য ব্যাপকভাবে মনোযোগ কেড়েছে।

আরও পড়ুনভারতে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান, কনটেন্ট২৯ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

জেনারেল মুনিরের এ বক্তব্যের সঙ্গে পেহেলগামে হামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকতে পারে। কেননা পাকিস্তানের নেতারা অনেক বছর ধরেই এমন ধরনের আদর্শিক বক্তব্য–বিবৃতি দিয়ে আসছেন।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার স্থলে ছড়িয়ে আছে চেয়ার–টেবিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ