মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে বলেছেন, আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করছে। তারা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরানো এবং উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই কথা জানায়। বৈঠকে গাজা পুনর্গঠনের গতি বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি। 

আরও পড়ুনফিলিস্তিনিদের গাজায় ফেরার অধিকার দেওয়া হবে না: ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগে

বদর আবদেলাত্তি বৈঠকে মার্কো রুবিওকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘ব্যাপক এবং ন্যায়সংগত শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ অর্জন করতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তাঁর দেশ।

ফিলিস্তিনিরা গাজাসহ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। তাই উপত্যকাটি থেকে তাঁদের সরে যেতে বলার যে কোনো ধরনের পরামর্শ ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আরব দেশগুলো এই ধরনের পরামর্শ ২০২৩ সালে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের কড়া জবাব দিল রিয়াদ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান ‘ঐতিহাসিক অন্যায়ের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং তাঁদের ‘বৈধ ও অবিচ্ছেদ্য অধিকার’ পুনরুদ্ধারে কাজ করা।

ট্রাম্প সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে

বলেছেন, তাঁর গাজা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার অধীনে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটিতেফেরার কোনো অধিকার থাকবে না।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দা হচ্ছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেতারা বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

আরও পড়ুনগাজাকে ‘বড় আবাসন এলাকা’ মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র পরর ষ ট রমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ