Risingbd:
2025-06-16@04:04:29 GMT

‘অপেক্ষায় থাকি, কবে দিনটি আসবে’

Published: 12th, February 2025 GMT

‘অপেক্ষায় থাকি, কবে দিনটি আসবে’

“পোড়াদহ মেলা আমাদের আত্মার সাথে মিশে গেছে। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে আমাদের আনন্দের সীমা অতিক্রম করে যায়। কারণ, এদিন আমাদের বাড়িভর্তি আত্মীয় থাকেন। বাড়িতে রান্না হয় অনেক রকম। মাছ, মাংস, মিষ্টি, খাবার এত পরিমাণ জমা হয় যে, খেয়ে শেষ করা যায় না। এদিনটিতে আমরা ঈদের দিনের চেয়েও বেশি আনন্দ করি। কারণ, ঈদের দিনও তো এরকম সবাইকে পাওয়া যায় না। সবার মুখ দেখতে পাওয়া যায় না। আমরা অপেক্ষায় থাকি, কবে এদিনটি আসবে।” 

এভাবেই বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ৪৫০ বছরের পুরনো পোড়াদহ মেলার গুরুত্ব উপস্থাপন করছিলেন ওই উপজেলার মড়িয়া গ্রামের শাহীন আলম।

তিনি জানান, তার বাড়িতে মেয়ে জামাই, বিয়াই-বিয়ান, নাতি-নাতনী সবাই এসেছেন। তাই তিনি মেলায় এসেছিলেন মাছ কিনতে। তার ছেলেকে সাথে নিয়ে মেলা থেকে দুটো ব্রিগহেড মাছ কিনেছেন। পরে আবার মেলায় আসবেন। তখন মিষ্টি কিনবেন। তার জামাইও মেলায় ঘুরাঘুরি করছেন। সে কি কিনবে সেই ভালো জানে!

বড় বড় মাছ নিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকৃর্ষণের চেষ্টা বিক্রেতার

পোড়াদহ এলাকায় এই মেলার গোড়াপত্তন ঘটে প্রায় ৪৫০ বছর আগে। কথিত আছে, ওই সময় মেলা সংগঠনের স্থানে একটি বিশাল বটবৃক্ষ ছিল। একদিন সেখানে এক সন্ন্যাসীর আবির্ভাব হয়। পরে দলে দলে সন্ন্যাসীরা এসে একটি আশ্রম তৈরি করেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে সেটি পুণ্যস্থানে পরিণত হয়। 

পরবর্তীতে, প্রতিবছর মাঘের শেষ বুধবার ওই স্থানে সন্ন্যাসী পূজার আয়োজন করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এতে সমাগত হন দূর-দূরান্তের ভক্তরা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে পূজার দিনটি একটি গ্রাম্য মেলার গোড়াপত্তন হয়। এক সময় সন্ন্যাসীরা স্থানটি ত্যাগ করে চলে গেলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সন্ন্যাসী পূজা বন্ধ করে দেননি। এভাবেই বাড়তে থাকে মেলার পরিচিতি।

মেলাটি প্রথা অনুযায়ী মাঘের শেষদিনের নিকটবর্তী বুধবারে ইছামতী নদীর পাড়ে আয়োজিত হয়। মেলাটি সন্ন্যাস মেলা বা মাছের মেলা নামেও পরিচিত। তবে হাল আমলে এসে মেলাটি জামাই মেলা নামে বেশি পরিচিতি পেয়েছে। যে কারণে রীতি অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে নিয়ে যেতে চলে জামাইদের মধ্যে নীরব প্রতিযোগিতা।

অন্যান্য মাছের পাশাপাশি ব্রিগহেড মাছের বেশ দাপট দেখা গেছে মেলায় 

মেলা উপলক্ষে আগের রাত থেকেই মেলাস্থলে গাড়িতে করে আনা হয় বড় বড় মাছ। মিষ্টি দোকানে ধুম পড়ে ‍নানান স্বাদের মিষ্টি বানানোর। ভোর হওয়ার সাথে সাথে শ্বশুর বাড়ির স্বজনদের নিয়ে মেলায় আসেন এলাকার জামাইয়েরা। পোড়াদহ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিশাল বিশাল মাছ। এর পরের আকর্ষণ মাছ এবং পাতা আকৃতির বড় বড় মিষ্টির। এই মিষ্টিগুলোর ওজনও হয় সাধারণ মিষ্টির চেয়ে অনেক বেশি, আকারও বড়। কোনটা পাঁচ কেজি আবার কোনটা ২০ থেকে ৪০ কেজিও। 

এছাড়া মেলায় কাঠের আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, কসমেটিকস, খেলনা প্রায় চার হাজার দোকানে মিলবে সংসারের যাবতীয় সবকিছু। 

মেলায় মাছ কিনতে আসা শাহাদাত হোসেন বলেন, “প্রতিবছর মেলায় মাছ কিনতে আসি। এবারো এসেছি। ১২ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ কিনেছি। পোড়াদহ মেলা বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। মেলায় বিগত বছরে বড় বড় মাছ উঠতো। এবারের মেলায় তুলনায় বড় মাছ ওঠেনি।” 

এসব এলাকার জামাইদের একটি অদৃশ্য প্রতিযোগীতা থাকে বড় মাছ কেনার

৯ হাজার ৯০০ টাকা দিয়ে প্রায় দশ কেজি ওজনের একটি বোয়াল কিনেছেন আবু তাহের বুলবুল। গত আড়াই বছর আগে তিনি গাবতলী উপজেলার কলাকোপা গ্রামে বিয়ে করেছেন। হয়েছেন এলাকার জামাই। 

তিনি বলেন, “মেলায় মাছের আমদানি কম। আরও বড় মাছ কেনার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু আমদানি তেমন না থাকায় কিনতে পারলাম না। শ্বশুরবাড়ী থেকে আমাকে পর্যাপ্ত টাকা দেয়া হয়েছে। আর বাকি টাকা যা লাগছে তা দিয়ে বড় একটা মাছটা কিনেছি।”

গাবতলীর মড়িয়া গ্রামের রাফি বলেন, “মেলা উপলক্ষ্যে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা খরচ করা হয়। প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ যার যত আত্মীয় স্বজন আছে প্রত্যেককেই দাওয়াত দেয়া হয়। তাই প্রতিটি পরিবার থেকেই বড় আকারের মাছ কেনার এক প্রকার প্রতিযোগিতা থাকে। এছাড়া একেকজন মিষ্টিও কেনেন ১০ থেকে ১৫ কেজি করে। যার বাড়িতে বেশি মেহমান উপস্থিত হয়, সে বাড়িতে এক মণ মিষ্টিও কেনা হয়।

মাছ ব্যবসায়ী সুজন বলেন, “আমরা প্রতি বছর সিরাজগঞ্জ থেকে যমুনা নদীর বড় বড় মাছ নিয়ে আসি। এবার মাছের দাম একটু কম। আমরা পাঙ্গাস, কাতল, চিতল, আইড়, রুই, ব্রিগহেড মাছ নিয়ে এসেছি। প্রতি বছর ১৫-২০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করি। এবার করতে পারব বলে আশা করছি।”

মাছের মেলাকে ঘিরে বসে মিষ্টির মেলাও, সাথে থাকে গ্রামীণ মেলার নানা উপসঙ্গ

মিষ্টি বিক্রেতা আব্দুল বারী জানান, ১০ লাখ টাকার মিষ্টি বিক্রির টার্গেট তার। তার কোন মিষ্টি ফেরত যায় না। সব বিক্রি হয়ে যায়। তার দোকানে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি পর্যন্ত মিষ্টি রয়েছে। মাছ আকৃতির মিষ্টিগুলোর ওজন ১০ কেজি থেকে ১৫ কেজি করে। এই মিষ্টিগুলোই ৫০০ টাকা কেজি। আর লাভ আকৃতির মিষ্টি ৩০০ টাকা করে কেজি।

মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল মজিদ মন্ডল বলেন, “মেলাটি মূলত মাছের। মেলায় প্রায় ৫০০টি মাছের দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলোতে একদিনে পাঁচ কোটি টাকার মতো লেনদেন হবে।”

গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিক ইকবাল বলেন, “মেলাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের একটি টিম কাজ করছে। এছাড়া যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।”

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বড় বড় ম ছ র একট গ বতল

এছাড়াও পড়ুন:

ডলার ও বিদেশিদের ব্যাংক হিসাবে আমানত এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ

হঠাৎ করে দেশে অবস্থানকারী বিদেশিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার বাংলাদেশিরাও দেশের ব্যাংকগুলোতে আগের চেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা জমা রাখছেন। এতে ব্যাংকগুলোতে বিদেশি মুদ্রার যে হিসাব আছে, সেটিও বাড়ছে অন্যান্য আমানত হিসাবের চেয়ে বেশি। গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রায় রক্ষিত আমানত বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যদিও বিদেশি মুদ্রার বাইরে দেশীয় মুদ্রার আমানত হিসাবে এক বছরে আমানত বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত ব্যাংকগুলোর আর্থিক তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মূলত ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এসব হিসাবে অর্থ জমা বেশি বেড়েছে। এর ফলে ঘরে রাখা ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। এটা শুরু হয়েছে আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত বা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাব ও বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবের ওপর সুদসহ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কারণে।

আমানত কতটা বাড়ল

দেশের ব্যাংকগুলোতে নানা ধরনের আমানত পণ্য রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দেশি ও বিদেশিদের জন্য পৃথক আমানত পণ্য। বিদেশি মুদ্রার জন্য রয়েছে পৃথক আমানত পণ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবস্থান করা বিদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিদেশিরা সাধারণত বিদেশি মুদ্রাকে টাকায় রূপান্তর করে এই ধরনের হিসাব পরিচালনা করেন, ব্যাংকের ভাষায় এসব হিসাবকে কনভার্টেবল টাকা অ্যাকাউন্ট অব ফরেনার্স বা বিদেশিদের জন্য টাকায় রূপান্তরযোগ্য হিসাব বলা হয়। ২০২৪ সালের মার্চে এই ধরনের হিসাবে জমা ছিল ১ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা, গত মার্চ শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।

একইভাবে বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবেও (এফসিএ) জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের মার্চে এই ধরনের হিসাবে জমা ছিল ৬ হাজার ৫৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। গত ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ। আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোই সাধারণ এফসিএ হিসাব খুলে থাকে। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এ ধরনের হিসাব খুলতে পারেন।

এ ছাড়া শুধু প্রবাসীদের জন্য আলাদা আমানত হিসাবও রয়েছে, তাতে স্থিতি খুব বেশি বাড়েনি। গত বছরের মার্চে প্রবাসীদের আমানত হিসাবে স্থিতির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবে (আরএফসিডি) আমানতও বেড়েছে। গত বছরের মার্চে এই ধরনের হিসাবে আমানত ছিল ২৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা।

তবে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে আমানত সেভাবে বাড়েনি। ২০২৪ সালের মার্চে পুরো খাতে আমানত ছিল ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে হয় ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছে ১ শতাংশের কিছু বেশি।

কেন বাড়ছে ডলার ও বিদেশিদের জমা অর্থ

দেশে ডলার–সংকট দেখা দেওয়ায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মানুষের ঘরে থাকা ডলার ব্যাংকে ফেরাতে আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত বা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাবের ওপর সুদসহ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই দি সিটিসহ কিছু ব্যাংক বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে এই ধরনের হিসাব খুলতে শুরু করে। বর্তমানে নগদ ডলারের বড় অংশ মজুত আছে ইস্টার্ন, দি সিটি, ব্র্যাক, ডাচ্-বাংলা, প্রাইম, পূবালী, বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসি এবং দেশীয় মালিকানাধীন ইসলামীসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকে। মার্কিন ডলারের পাশাপাশি পাউন্ড, ইউরো, অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডিয়ান ডলার, সিঙ্গাপুরি ডলারেও আরএফসিডি হিসাব খোলা যায়।

সুদ বৃদ্ধিসহ ব্যাংকগুলোর নানা উদ্যোগের ফলে ঘরে থাকা ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। কারণ, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের এসব হিসাবে জমা বিদেশি মুদ্রার ওপর সুদ দিচ্ছে। পাশাপাশি এই ধরনের হিসাবের ডলার কোনো বাছবিচার ছাড়াই দেশে ও বিদেশে গিয়ে খরচ করা যাচ্ছে। প্রতিবার বিদেশ ভ্রমণের সময় এই হিসাব থেকে নগদ ৫ হাজার মার্কিন ডলার নেওয়া যায়। হিসাবধারী এবং তার ওপর নির্ভরশীলদেরও প্রয়োজনে বিদেশে কয়েকটি খাতে অর্থ খরচের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ, সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে খরচ। এসব খাতে খরচের কোনো সীমা রাখেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে শুধু হিসাবধারীরা নিজ প্রয়োজনে বিদেশে অর্থ নেওয়া ও খরচের সুবিধা পেতেন।

এদিকে ব্যবহারযোগ্য সব ধরনের বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে প্রবাসীদের জন্য। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের নামে খোলা বৈদেশিক হিসাবের সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এত দিন শুধু অনুমোদিত চারটি বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের হিসাব খোলার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো ডলার, পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েন। কিন্তু এখন অনুমোদিত মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারছেন প্রবাসীরা।

এ ছাড়া যেসব বিদেশি বাংলাদেশে কর্মরত ও বসবাস করছেন, তাঁদের যে টাকার হিসাব রয়েছে, তাতেও আমানত বেড়েছে। এ ধরনের হিসাবে গত সেপ্টেম্বরে আমানত বেশ কমে যায়, তবে ডিসেম্বরে আবার তা বেড়ে যায়। আর গত মার্চ শেষে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগস্টে বড় পরিবর্তনের পর দেশের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আবার অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপে বিদেশিরা সহায়তা দিচ্ছেন। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ছে ও এই ধরনের হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বাড়ছে।

এ বিষয়ে বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক হিসাবে ডলার জমা রাখলে এখন সুদ পাওয়া যায়, এ ছাড়া রয়েছে নানা সুবিধা। যাঁরা নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করেন, তাঁরাও এখন নিজ নিজ হিসাবে ডলার জমা রাখছেন। এতে মুদ্রার মান কমলেও কোনো ক্ষতি হয় না। এ ছাড়া চীনের বিনিয়োগকারীরা দেশে আসছেন। এই কারণে বিদেশিদের হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বাড়তে পারে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো খবর। কারণ, অন্য আমানতে যখন এত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না, তখন ডলার হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ