সাতক্ষীরায় তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার উদীচীর স্টলের ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে এক ব্যক্তি ব্যানারটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। আজ বেলা ১১টায় শহীদ আবদুল রাজ্জাক পার্কে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ একুশের বইমেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, এনডিসি পলাশ আহমেদ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো.

জাহারুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা ফাইজা হোসেন প্রমুখ। বিকেলে মেলায় সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উদীচীকে স্টল দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হওয়ার একমাত্র বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী দেশে অরাজকতা পরিস্থিতির সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করেছিল। সেই উদীচীর স্টল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন এটা হয়েছে, কিসের জন্য হয়েছে, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ৫ আগস্টের পর থেকে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে যতগুলো প্রোগ্রাম বা মিটিং হয়েছে, কোনো না কোনোভাবে ফ্যাসিস্টদের দোসর কিংবা তার সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসক কীভাবে তাঁর দায়িত্বের জায়গা থেকে এ রকম একটা কাজ করতে পারেন?’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে উদীচী স্টলের পার্শ্ববর্তী ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীতে থাকা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমানের লেখা ‘জীবন ও ঐতিহ্য’ বইটি সরিয়ে ফেলতে বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীর লোকজন বইটি সরিয়ে ফেলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন এসে উদীচীর স্টলের ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন। পরে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে সেটিতে আগুন দেন।

শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ও তাঁদের দেওয়া ব্যানার টানিয়ে স্টল চালু করা হয়েছিল। হঠাৎ ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগারের ২০টি বই তাঁর স্টলে ছিল, সেগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা নিয়ে গেছেন।

তবে আরাফাত হোসেন দাবি করেন, তাঁরা ব্যানার খোলেননি কিংবা পোড়াননি। ক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি এটি পুড়িয়েছেন। তাঁরা শুধু জেলা প্রশাসকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, তাঁর কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রণি (নাজমুল হোসেন) ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন বিষয়টি দেখবেন। একজন এডিসিকে গিয়ে দেখতে বলেছেন। এর আগেই ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।

রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা। 

বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো। 

বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া। 

আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। 

বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’

বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। 

উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’