সাতক্ষীরায় বইমেলায় পোড়ানো হলো উদীচীর স্টলের ব্যানার
Published: 12th, February 2025 GMT
সাতক্ষীরায় তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার উদীচীর স্টলের ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে এক ব্যক্তি ব্যানারটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। আজ বেলা ১১টায় শহীদ আবদুল রাজ্জাক পার্কে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ একুশের বইমেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, এনডিসি পলাশ আহমেদ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো.
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হওয়ার একমাত্র বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী দেশে অরাজকতা পরিস্থিতির সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করেছিল। সেই উদীচীর স্টল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন এটা হয়েছে, কিসের জন্য হয়েছে, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ৫ আগস্টের পর থেকে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে যতগুলো প্রোগ্রাম বা মিটিং হয়েছে, কোনো না কোনোভাবে ফ্যাসিস্টদের দোসর কিংবা তার সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসক কীভাবে তাঁর দায়িত্বের জায়গা থেকে এ রকম একটা কাজ করতে পারেন?’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে উদীচী স্টলের পার্শ্ববর্তী ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীতে থাকা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমানের লেখা ‘জীবন ও ঐতিহ্য’ বইটি সরিয়ে ফেলতে বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীর লোকজন বইটি সরিয়ে ফেলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন এসে উদীচীর স্টলের ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন। পরে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে সেটিতে আগুন দেন।
শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ও তাঁদের দেওয়া ব্যানার টানিয়ে স্টল চালু করা হয়েছিল। হঠাৎ ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগারের ২০টি বই তাঁর স্টলে ছিল, সেগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা নিয়ে গেছেন।
তবে আরাফাত হোসেন দাবি করেন, তাঁরা ব্যানার খোলেননি কিংবা পোড়াননি। ক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি এটি পুড়িয়েছেন। তাঁরা শুধু জেলা প্রশাসকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, তাঁর কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রণি (নাজমুল হোসেন) ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন বিষয়টি দেখবেন। একজন এডিসিকে গিয়ে দেখতে বলেছেন। এর আগেই ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডায় নির্বাচন: মার্ক কার্নির লিবারেল সদর দপ্তরে উৎসব শুরু
কানাডায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি বলেছে, এবার লিবারেল সরকার হতে চলেছে।
কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে মার্ক কার্নিই যে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সব সময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।—পিয়েরে পলিয়েভর, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতাপুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে গতকাল সোমবার ভোট দিয়েছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা দেশটিতে নির্বাচনের আগে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পলিয়েভরের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সামান্য পিছিয়ে ছিল কার্নির লিবারেল দল। ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলা শুরু করলে কানাডীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের জোয়ার ওঠে এবং জরিপের পূর্বাভাসে হঠাৎ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভোটের দিন সকালেও ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম কাঙ্ক্ষিত অঙ্গরাজ্য হয়, তবে শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।
লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে সমর্থকদের উল্লাস