শত শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে বগুড়ার গাবতলীর ইছামতি নদীর তীরে বুধবার বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা। মেলার পরদিন বৃহস্পতিবার হবে বউমেলা। মেলাকে ঘিরে আশপাশের গ্রামে বইছে উৎসবের আমেজ।

প্রতিবছর মাঘের শেষ বা ফাল্গুনের প্রথম বুধবার পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এ মেলা গ্রামীণ সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে বিশাল আকৃতির মাছ ও মিষ্টির জন্য বিখ্যাত এই মেলা।

পোড়াদহ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিশাল বিশাল মাছ। বুধবার ভোরের আগেই মেলায় নিয়ে আসা হয় বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক বাঘাইর, কাতলা ও বোয়াল।

মাছ ব্যবসায়ী সাধন চন্দ্র জানান, তিনি এবার ২২০ মণ বড় মাছ এনেছেন, যা ভালো দামেও বিক্রি হচ্ছে। মেলায় এবার প্রায় অর্ধশত বাঘাইর এসেছে, যার প্রতিটির ওজন ৪০ কেজির বেশি। এছাড়া ৩৫ কেজির বেশি ওজনের কাতলা ও বোয়ালও এসেছে শতাধিক।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, সকালে মাছের আড়তগুলোতে ব্যাপক ভিড় লেগে থাকে। খুচরা বিক্রেতারা এসব মাছ কিনে নিজ নিজ দোকানে নিয়ে যান এবং দিনভর চলে জমজমাট বেচাকেনা।

মাছের পাশাপাশি বাহারি মিষ্টান্নও এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। এখানে পাওয়া যায় মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই ও শুকনা মিষ্টি।

মিষ্টি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ১৫ কেজি ওজনের ৫টি মিষ্টি তৈরি করে এনেছেন। প্রতিটি মিষ্টির দাম ৭৫০ টাকা। বিশেষত ১০ কেজির মিষ্টি এই মেলার অন্যতম দর্শনীয় উপকরণ।

পোড়াদহ মেলাকে কেন্দ্র করে নতুন জামাই-বউকে দাওয়াত দেওয়া একটি প্রচলিত রীতি। স্থানীয় রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, তিনি তার মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত দিয়েছেন এবং তাদের জন্য মাছ ও মিষ্টি কিনেছেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে মেলাস্থলে একটি বিশাল বটগাছ ছিল। একসময় এখানে এক সন্ন্যাসী আশ্রম গড়ে তোলেন। পরে এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পূণ্যস্থানে পরিণত হয়। তখন থেকেই প্রতি বছর এখানে বিশাল মেলা বসে আসছে।

মেলা উপলক্ষে তিন দিন আগে থেকেই দোকান বসতে শুরু করে। স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মজিদ মণ্ডল জানান, পুরো এলাকা উৎসবের আমেজে ভরে উঠেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শিশুসাহিত্যিক অমিত কুমার কুণ্ডুর শিশুতোষ ছড়ার বই ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বইটির প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।

শিক্ষাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দন্ত্যস রওশন, লোকসংস্কৃতিবিদ তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক সঙ্গীতা ইমাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

নদী স্মৃতিনির্ভর সংকলন গ্রন্থ ‘আমার নদী’ প্রকাশিত 

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

প্রধান অতিথির আলোচনায় রফিকুর রশীদ বলেন, “১২৪টি ফলের ওপর লেখা এই বইয়ের ছড়াগুলো কেবল পাঠকের রসাস্বাদনই করাবে না, শিশু শিক্ষামূলক এই ছড়াগুলো রসোত্তীর্ণও বটে।”

তিনি দেশের প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন,“প্রকাশকদের বেশি বেশি এরকম প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা উচিত।”

বইটির ব্যতিক্রমী আকৃতির দিকে ইঙ্গিত করে দন্ত্যস রওশন বলেন, “পাঠক তৈরির প্রয়াসেই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এমন ক্ষুদ্রাকৃতির ও নতুন নতুন সাইজের বইয়ের ধারণা বাজারে আনছে। এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, “শিক্ষার দুটো দিক রয়েছ।একটি হলো ট্রাডিশনাল, যা আমরা পড়েছি, আপনারাও পড়েন। আরেকটি  হলো জাঁ জ্যাক রুশোর পদ্ধতি। তিনি বলেছে, প্রকৃতির সঙ্গে শেখা।রবীন্দ্রনাথ যা বিশ্বভারতীর মাধ্যমে করিয়ে দেখিয়েছেন।অমিত কুমার কুণ্ডুর ছড়ার বইটি সে রকমই।এর মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করবে শিশুরা ও ওরা শিখবে। এরকম বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকে ধন্যবাদ। আমাদের প্রকাশকদের এ ধরনের বই বেশি বেশি করতে হবে।”

কাঁচামিঠে ফলের ছড়া বইটির পাতায় পাতায় দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফলের পরিচয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নান্দনিক অলংকরণে ছন্দে-ছড়ায় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি থেকে ছড়া আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।

অনুষ্ঠান শেষে ছিল মৌসুমী ফল দিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোশাররফ করিমের ২৪ মিনিটের সিনেমা যুক্তরাষ্ট্রের উৎসবে
  • ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’
  • চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
  • ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন