বগুড়ায় ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা, বিশাল মাছ ও বাহারি মিষ্টিতে জমজমাট উৎসব
Published: 12th, February 2025 GMT
শত শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে বগুড়ার গাবতলীর ইছামতি নদীর তীরে বুধবার বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা। মেলার পরদিন বৃহস্পতিবার হবে বউমেলা। মেলাকে ঘিরে আশপাশের গ্রামে বইছে উৎসবের আমেজ।
প্রতিবছর মাঘের শেষ বা ফাল্গুনের প্রথম বুধবার পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এ মেলা গ্রামীণ সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে বিশাল আকৃতির মাছ ও মিষ্টির জন্য বিখ্যাত এই মেলা।
পোড়াদহ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিশাল বিশাল মাছ। বুধবার ভোরের আগেই মেলায় নিয়ে আসা হয় বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক বাঘাইর, কাতলা ও বোয়াল।
মাছ ব্যবসায়ী সাধন চন্দ্র জানান, তিনি এবার ২২০ মণ বড় মাছ এনেছেন, যা ভালো দামেও বিক্রি হচ্ছে। মেলায় এবার প্রায় অর্ধশত বাঘাইর এসেছে, যার প্রতিটির ওজন ৪০ কেজির বেশি। এছাড়া ৩৫ কেজির বেশি ওজনের কাতলা ও বোয়ালও এসেছে শতাধিক।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, সকালে মাছের আড়তগুলোতে ব্যাপক ভিড় লেগে থাকে। খুচরা বিক্রেতারা এসব মাছ কিনে নিজ নিজ দোকানে নিয়ে যান এবং দিনভর চলে জমজমাট বেচাকেনা।
মাছের পাশাপাশি বাহারি মিষ্টান্নও এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। এখানে পাওয়া যায় মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই ও শুকনা মিষ্টি।
মিষ্টি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ১৫ কেজি ওজনের ৫টি মিষ্টি তৈরি করে এনেছেন। প্রতিটি মিষ্টির দাম ৭৫০ টাকা। বিশেষত ১০ কেজির মিষ্টি এই মেলার অন্যতম দর্শনীয় উপকরণ।
পোড়াদহ মেলাকে কেন্দ্র করে নতুন জামাই-বউকে দাওয়াত দেওয়া একটি প্রচলিত রীতি। স্থানীয় রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, তিনি তার মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত দিয়েছেন এবং তাদের জন্য মাছ ও মিষ্টি কিনেছেন।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে মেলাস্থলে একটি বিশাল বটগাছ ছিল। একসময় এখানে এক সন্ন্যাসী আশ্রম গড়ে তোলেন। পরে এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পূণ্যস্থানে পরিণত হয়। তখন থেকেই প্রতি বছর এখানে বিশাল মেলা বসে আসছে।
মেলা উপলক্ষে তিন দিন আগে থেকেই দোকান বসতে শুরু করে। স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মজিদ মণ্ডল জানান, পুরো এলাকা উৎসবের আমেজে ভরে উঠেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫
রাজধানীর সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫’ তরুণ শিক্ষার্থীদের মধে৵ অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। ‘ফার্ম ফ্রেশ’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর সহযোগিতায় আয়োজিত এই গণিত উৎসবে শিক্ষার্থীরা মেধা, যুক্তি ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক কঠিন লড়াইয়ে অংশ নেয়। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা ছিল না; বরং গণিতকে নতুন করে আবিষ্কার করার এক আনন্দময় যাত্রা ছিল এটি।
প্রথম দিন: উৎসবের সূচনা ও নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন
১১ সেপ্টেম্বর এই গণিত উৎসবের শুভসূচনা হয়। সকাল থেকেই স্কুল প্রাঙ্গণ ছিল প্রাণবন্ত। দূরদূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত কাউন্টারে রিপোর্ট ও রেজিস্ট্রেশন করতে ব্যস্ত ছিল। তাদের চোখেমুখে ছিল উত্তেজনা আর নতুন কিছু শেখার আগ্রহ। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এক বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই মহাযজ্ঞের সূচনা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (আইআরই) অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক স্বাক্ষর শতাব্দ।
এরপর শুরু হয় দিনের প্রথম ইভেন্ট ‘জেনেসিস’, যেখানে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা যাচাই করা হয়। মধ্যাহ্নভোজের পর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও মজার ইভেন্ট ছিল ‘ক্রিপ্টোম্যানিয়া’। এতে শিক্ষার্থীরা কোড ও সংকেত ব্যবহার করে গণিতবিষয়ক ধাঁধা সমাধান করে এবং প্রতিটি ধাঁধার সমাধান তাদের পরবর্তী ক্লু পর্যন্ত নিয়ে যায়। দিনের শেষ ইভেন্ট ছিল ‘টিক-ট্যাক-টো’, তবে গণিতের সমীকরণ ব্যবহার করে খেলাটিকে এক ভিন্নমাত্রা দেওয়া হয়। প্রথম দিনের প্রতিটি ইভেন্টই প্রমাণ করেছে যে গণিত শুধু ক্লাসের চারদেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি এক বিশাল উন্মুক্ত জগৎ।
আরও পড়ুনস্পোর্টস ফিজিওথেরাপিতে বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিজিওথেরাপিস্ট আফজাল ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫তিন দিনব্যাপী ‘যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫’ তরুণ শিক্ষার্থীদের মধে৵ সাড়া জাগিয়েছে