চট্টগ্রামে শেষ হলো ‘মা-মারিয়ার তীর্থোৎসব’
Published: 14th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের মরিয়ম আশ্রমে আয়োজিত ‘মা-মারিয়ার তীর্থোৎসব’ শেষ হয়েছে। দুই দিনের এই উৎসবে সারা দেশ থেকে প্রায় আট হাজার খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী অংশ নেন। ‘মা-মারিয়ার হাত ধরে, মেষপালকের সঙ্গে বিশ্বাসের পথে’- এই প্রতিপাদ্যে গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া উৎসব আজ শুক্রবার সকালে শেষ হয়।
দুই দিনের উৎসব উপলক্ষে দেয়াঙ পাহাড়ের আশ্রম ও আশপাশের এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। উৎসবের সমাপ্তি হয় বিশ্বশান্তি ও মানব জাতির কল্যাণের জন্য প্রার্থনার মধ্য দিয়ে।
আয়োজকেরা জানান, পবিত্র খ্রিষ্টযাগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীর্থোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এতে পৌরোহিত্য করেন চট্টগ্রাম ক্যাথলিক আর্চ ডাইয়োসিসের আর্চবিশপ সুব্রত লরেন্স হাওলাদার। এরপর নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করেন ভক্তরা।
গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পর তীর্থযাত্রীরা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আলোক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। আজ সকালে মহাখ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন বরিশাল ক্যাথলিক ডাইয়োসিসের বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও।
উল্লেখ্য যে, ১৫১৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে পর্তুগিজ বণিকদের আগমনের মধ্যে দিয়ে পূর্ববঙ্গে খ্রিষ্টবিশ্বাসেরও আগমন ঘটে। ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পর্তুগিজ বণিকেরা চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। এরপর ১৫৯৮ সালে দক্ষিণ ভারতের কোচিন থেকে বাংলায় প্রথম মিশনারিরা আসেন।
প্রথম মিশনারি জেজুইট ধর্মসংঘের পুরোহিত ফাদার ফ্রান্সেসকো ফার্নান্দেজ দেয়াঙয়ে পূর্ববঙ্গের প্রথম গির্জা নির্মাণ করেন ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে। ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাথরঘাটা বান্ডেল রোড ও জামালখানে দুটি গির্জা নির্মাণ করেন। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মরিয়ম আশ্রমে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা বসে মা মারিয়া তীর্থ উৎসবে। এবারও সম্মিলিত খ্রিষ্টযাগে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু।
দুদিনের উৎসবে অংশ নিতে আসা ব্রিজেট ডায়েস বলেন, ‘সারা দেশ থেকে আমাদের সম্প্রদায়ের আট হাজারের বেশি ভক্ত এসেছেন। এমন আয়োজনে আসতে পেরে সত্যি অনেক ভালো লাগছে। আমাদের আশা একটাই- বিশ্বশান্তি।’
চট্টগ্রাম ক্যাথলিক আর্চ ডাইয়োসিসের পালকীয় সেবা দলের সেক্রেটারি ফ্লেভিয়ান ডি কস্তা বলেন, এমন আয়োজনের জন্য খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ পুরো বছর ধরে অপেক্ষায় থাকেন। তীর্থোৎসবে অংশগ্রহণকারীরা ভক্তিপূর্ণ সময় অতিবাহিত করেছেন।
রেজাউল//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র থ ৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ
মেঘ রোদের লুকোচুরির সকালে শিল্পী সোহানী মজমুদার সেতার বাদনে ‘রাগ আহীর ভৈরব’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষাকাল উদযাপনের আয়োজন। রোববার সকাল সোয়া ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ‘বর্ষা উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়।
আষাঢ়ের প্রথম দিন এই আয়োজনটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়। গানে, কথনে, আবৃত্তিতে বর্ষা বন্দনা করা হয়।
আয়োজনে রাগ ভৈরবীর পর বর্ষা কথন পর্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান। ঘোষণা পাঠ করেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী।
কথনের পর মূল আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ইয়াসমিন মুশতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, অনিমা রায়, শামা রহমান, মকবুল হোসেন, ফেরদৌসী কাকলি, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, শ্রাবনী গুহ রায়সহ আরও অনেকেই।
এছাড়াও আবৃত্তি পরিবেশন করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, আসান উল্লাহ তমালসহ অনেকেই।
দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন ধৃতি নর্তনালয়, নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, বেমুকা ললিতকলা কেন্দ্র, সিনথিয়া একাডেমি অফ আর্টস ও নৃত্যম।
এছাড়া ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ওষুধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।