১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে কুয়েতে জন্মগ্রহণ করেন সারা লরেন। দেশভাগের পর তার দাদা সপরিবারে রাজস্থান থেকে কুয়েতে চলে যান। সারার বাবা-মা দু’জনেরই জন্ম পাকিস্তানে। সারা যখন কিশোরী, তখনই তার বাবা মারা যান। তারপর মাকে নিয়ে লাহোরে পাড়ি জমান। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ।

করাচি এবং দিল্লিতে একাধিক মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন সারা লরেন। ২০০২ সালে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন। ২০১২ সাল পর্যন্ত একের পর এক উর্দু ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছেন সারা। ২০০৪ সালে উর্দু ভাষার ‘মাহনুর’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে।

 

অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিংও করেছেন সারা লরেন। পাকিস্তানের এই মডেল-অভিনেত্রী বলিউড নির্মাতাদেরও নজর কাড়েন। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় সানি দেওল অভিনীত ‘কাফিলা’ সিনেমা। হিন্দি ভাষার এ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান সারা।

 

২০১০ সালে মুক্তি পায় বলিউডের ‘কাজরার’ সিনেমা। এটি পরিচালনা করেন পূজা ভাট। এ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন সারা। বলিউড গায়ক, অভিনেতা হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে সিনেমাটিতে অভিনয় করেন তিনি। এরপরই তার ক্যারিয়ার অন্যদিকে মোড় নেয়। মুকেশ ভাট প্রযোজিত ‘মার্ডার থ্রি’ সিনেমা ২০১৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে রণদীপ হুদা, অদিতি রাও হায়দারির সঙ্গে দেখা যায় সারাকে। এরপর বলিপাড়ায় রাতারাতি জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

 

‘মার্ডার থ্রি’ সিনেমায় অভিনয়ের পর একাধিক সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন সারা লরেন। কিন্তু সব চরিত্রই ছিল একই ধরনের। এক সাক্ষাৎকারে সারা বলেছিলেন, “আমাকে কেউ বার ড্যান্সার, কেউ আইটেম গার্ল চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিতেন। তার বাইরে কিছুই পেতাম না।”

 

অন্য এক সাক্ষাৎকারে সারা লরেন জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সারা লরেন। সেই তরুণও বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘মার্ডার থ্রি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সারাকে ভারতে পাড়ি দিতে হয়। ভালোবাসার মানুষকে এ কথা না জানিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে ভারতে চলে যান। এরপর সারার প্রেমিক অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেন।

 

‘মার্ডার থ্রি’ ছাড়াও ‘বরখা’, ‘ফ্রড সাঁইয়া’, ‘ইশক ক্লিক’-এর মতো একাধিক হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন সারা। তারপরও অভিনয় জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এক সাক্ষাৎকারে সারা লরেন বলেছিলেন, “ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে প্রচুর ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই নিজেকে শাস্তি দিতে অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিই।”

 

খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে নিজের নাম বদলে রাখেন মোনা লিজা হোসেন। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইশরত মেড ইন চায়না’ শিরোনামে উর্দু ভাষার সিনেমায় সর্বশেষ অভিনয় করতে দেখা যায় সারাকে। তারপর আর বড় পর্দায় অভিনয় করেননি এই অভিনেত্রী।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ন স র পর দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা