‘নির্বাচনে কেউ অরাজকতা করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে’
Published: 16th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির মূখ্য সংগঠক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, “আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোন দল বা অপশক্তি অরাজকতা করলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।”
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে ‘ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনে বক্তব্য দেওয়ার সময় সারজিস আলম এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “যারা গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে প্রতিটি জেলা, উপজেলায় তারাই নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্বের সামনের সারিতে থাকবে। আমরা আশা করছি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা হবে। ফ্যাসিস্ট বিরোধী ছাত্রদের যে নতুন রাজনৈতিক দল হবে, সেই দল সব শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ৫ আগস্টের আগে এ দেশে যারা চাঁদাবাজি, দখলবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো সেই অরাজকতা এখনো বন্ধ হয়নি। অন্য কোন দল, অন্য কোন অপশক্তি সেই চাঁদাবাজি, দখলবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রদের নতুন দল হবে জনগণের দল।”
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সাকিল সাইফুল্লাহ-সহ নেতাকর্মীরা।
ঢাকা/অনিক/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জয় যেন হাতছাড়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন শেষ হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে তিন দিনের এই আয়োজন। শেষ দিনের আয়োজনে বক্তরা বলেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে বারবার জয় পেলেও তা হাতছাড়া হয়ে যায়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এবার উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন হয়েছে দুই অংশে ভাগ হয়ে। আজ বিকেলে আয়োজিত হয় কেন্দ্রীয় সংসদের আলোচনা পর্ব এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম।
শুরুতে জাতীয় পতাকা ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের পর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্মরণ করা হয় সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, কলিম শরাফী, গোলাম মোহাম্মদ ইদু, কামাল লোহানী, পান্না কায়সার, যতীন সরকার ও বদিউর রহমানকে।
আজকের আয়োজনে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ৫৬ বছর ধরে মুক্তির ব্রত নিয়ে উদীচী কাজ করছে। হতাশা, নিরাশা আর সাম্রাজ্যবাদ থেকে মুক্তিই উদীচীর চাওয়া। এ সময় সাবেক সংগঠক মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, আদর্শচ্যুতি হলে ঐক্য হয় না। উদীচীতে পারস্পরিক সংকট সব সময়ই ছিল। কিন্তু উদীচী কখনো রাজনৈতিক সংগঠন হয়নি।
উদীচীর সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারীর বক্তব্যে উঠে আসে ১৯৬৮ সালে একজন শিল্পীর নারিন্দার বাসায় উদীচী শুরু হওয়ার স্মৃতিকথা। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদীচীর কার্যক্রম আরও বেগবান করা প্রয়োজন। সত্যেন সেনের গানের কথা উল্লেখ করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
আয়োজনে উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক রানাসহ অন্য বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে উদীচী। যখনই দেশে কোনো সংকট দেখা দেয়, তখনই উদীচী আলোকবর্তিকা হয়ে মানুষকে পথ দেখানোর চেষ্টা করে। মানুষ বারবার আন্দোলন করে আত্মাহুতি দিয়ে অপশক্তির হাত থেকে রক্ষা পেলেও বারবারই সে জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। এই জয় যেন হাতছাড়া না হয়ে যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনা পর্ব সমাপ্ত করেন উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটি সাম্প্রদায়িক করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা উপমহাদেশের ঐতিহ্য হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা। সেই ঐতিহ্য এখন নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে—বিশেষ “মব” তৈরি করে।’ আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন।
‘ঘোর আঁধারে পথ দেখাবে আগুনের নিশান’ স্লোগানে উদীচীর একাংশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিন দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয় ২৯ অক্টোবর। ‘সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবিরোধী লড়াইয়ে উদীচী’ শিরোনামে প্রবন্ধ পাঠের পর সেদিন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজধানীর ডিআরইউতে। একই দিনে আরেক অংশের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তাদের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রগতির পথে জীবনের গান’। দেশে ও বিদেশে উদীচীর সাড়ে তিন শতাধিক জেলা ও শাখা সংসদে এবার একযোগে উদ্যাপন করেছে ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।