ইউনাইটেডের বিপক্ষে জয়ের হ্যাটট্রিক টটেনহামের, ফিরল ৪৫ বছরের পুরোনো স্মৃতি
Published: 16th, February 2025 GMT
ম্যাচ শুরুর আগেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের একটি খারাপ খবর শোনান রুবেন আমোরিম। ইউনাইটেড কোচ জানান এ মৌসুমে আর মাঠে নামার সম্ভাবনা নেই চোটে পড়া উইঙ্গার আমাদ দিয়ালোর।
এমন দুঃসংবাদ শুনে টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচ দেখতে বসা ইউনাইটেডের সমর্থকদের দুঃখটা নিশ্চিত দ্বিগুণ হয়েছে ম্যাচ শেষে। টটেনহাম স্টেডিয়ামে তাঁদের দল যে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে হেরে গেছে ১-০ গোলে। ১৩ মিনিটে করা জেমস ম্যাডিসনের গোলটি ধরে রেখেই সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইউনাইটেডের বিপক্ষে টানা তৃতীয় জয় পেল টটেনহাম। ৪৫ বছর পর ইউনাইটেডের বিপক্ষে জয়ের হ্যাটট্রিক পেল উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি।
আমোরিমের দল অবশ্য সমতা ফেরানোর ভালো সুযোগই পেয়েছিল। তবে আর্জেন্টাইন তারকা আলেহান্দ্রো গারনাচো গোল বরাবর তিনটি শট নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তাতে অবশ্য অনেক দিন পর দলে ফেরা টটেনহাম গোলরক্ষক গুলিয়েলমো ভিকারিও বড় ভূমিকাই রেখেছেন। এ ছাড়াও একবার ১০ গজ দূর থেকে বার উঁচিয়ে বাইরে পাঠান গারনাচো। টটেনহামও অবশ্য ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেছে। ম্যাথিয়াস তেলকে গোল করতে দেননি আন্দ্রে ওনানা।
ম্যাচটি শুরু আগে ইউনাইটেড ছিল পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বরে, টটেনহাম ১৫ নম্বরে। মৌসুমের নবম জয়ে ২৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে টটেনহাম উঠে গেছে ১২ নম্বরে। অন্যদিকে ২৫তম ম্যাচে ১২তম হারের দেখা পাওয়া ইউনাইটেড ২৯ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে ১৫ নম্বরে। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমের পর শীর্ষ লিগে এবারই প্রথম ২৫ ম্যাচে ১২ ম্যাচ হারল ইউনাইটেড। ৫১ বছর আগে সেই মৌসুমে প্রথম ২৫ ম্যাচে ১৩ ম্যাচ হারা ইউনাইটেড অবনমিত হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।