যুদ্ধপরবর্তী সময়ে শান্তি রক্ষার জন্য যদি প্রয়োজন পড়ে, তবে ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

এর মধ্য দিয়ে কিয়ার স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রকে দেখাতে চাইছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যে আলোচনা, তাতে ইউরোপের দেশগুলোর ভূমিকা থাকা উচিত।

ব্রিটিশ সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্রিটিশ সেনা ও নারীদের ‘ক্ষতির মুখে’ ফেলার সিদ্ধান্তটি হালকাভাবে নেননি। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও আগ্রাসন থেকে বিরত রাখতে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

ডেইলি টেলিগ্রাফে এক নিবন্ধে স্টারমার এসব কথা লিখেছেন। তিনি লেখেন, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ যখন শেষ হবে, সেটা শুধু পুতিন পুনরায় আক্রমণ করার আগপর্যন্ত একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলে হবে না।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এই প্রথম স্পষ্টভাবে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানালেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, কোনো শান্তিচুক্তি হলে তা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সহায়তা করতে রাজি আছে।

স্টারমার লেখেন, যদি প্রয়োজন পড়ে, তবে ইউক্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে তিনি প্রস্তুত আছেন।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘আমি এটা হালকাভাবে বলছি না। আমি খুবই গভীরভাবে এই দায়িত্ব নিয়ে ভেবেছি। এটা করতে গিয়ে ব্রিটিশ সেনাসদস্যদের ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবার প্যারিসে একটি সম্মেলনে বসতে চলেছেন ইউরোপের দেশগুলোর নেতারা।

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি শুরু করেছে। ওই আলোচনায় ইউরোপকে রাখা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ।

গত শনিবার কেলগের এই মন্তব্যের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জরুরি ওই সম্মেলনের ডাক দেন।

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক, ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশের নেতারা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

স্টারমায়ারও ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, মস্কোর যুদ্ধ বন্ধ করতে কোনো ‘সত্যিকারের আলোচনা’ শুরু হলে ইউক্রেন ও ইউরোপ তার অংশ হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পেতে এ সপ্তাহে সৌদি আরবে বৈঠক করবেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওরও থাকার কথা। পুতিন সত্যিই শান্তি চান কি না, তা বুঝতে ওই বৈঠকের আয়োজন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আরও পড়ুনইউক্রেন বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন ইউরোপের নেতারা১৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউর প র

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতুতে ঈদের ছুটির শেষ ৪৮ ঘণ্টায় ৭ কোটি টাকার টোল আদায়

ঈদের ছুটি শেষে গত দুই দিনে সড়কে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়ে যায় বহুগুণ। বেড়ে যায় যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপারও। বেড়েছে টোল আদায়ও। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় ১ লাখ ৭৭৭টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫০ টাকা।

যমুনা সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৮ হাজার ২৬৬টি যানবাহন রয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ৩৩ হাজার ৩২৯টি যানবাহন পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার ৫০ টাকা।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিকে ১৮ হাজার ৩৬৫টি যানবাহন পার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী যানবাহন ছিল ৩০ হাজার ৮১৭টি। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির জানান, স্বাভাবিক সময়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন প্রতিদিন পারাপার হয়। এবার ঈদের ছুটির শুরুতে এবং শেষে যানবাহন পারাপার কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ