রাস্তার পরিবর্তে টেবিলে বসে সমস্যার সমাধান করুন: ডিএমপি কমিশনার
Published: 17th, February 2025 GMT
রাস্তার পরিবর্তে টেবিল-চেয়ারে বসে যেকোনো সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার বিকেলে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের সংস্কারকৃত কার্যালয়ের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
সাজ্জাত আলী বলেন, এই অঞ্চলটা (মোহাম্মদপুর এলাকা) অত্যন্ত অপরাধপ্রবণ ছিল। কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিচরণ ছিল এই এলাকায়। মাসখানেক আগেও মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছিল। এখানে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অফিসার-ফোর্স মোতায়েন করে প্রতিদিন ব্লক রেইড দেওয়া হচ্ছে, টহল বাড়ানো হয়েছে। এতে ইদানীং ছিনতাই অনেক কমে গেছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অপরাধ বিভাগের পাশাপাশি সিটিটিসি ও ডিবির টহলও জোরদার করা হয়েছে। আমি আশা করছি ছিনতাই অচিরেই বন্ধ হবে। আমরা সকলে মিলে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
আগের তুলনায় এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো—এমন দাবি করে সাজ্জাত আলী বলেন, ‘তবে এখন বড় সমস্যা হচ্ছে অনেকে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামে। তারা ট্রাফিক বন্ধ করে মানুষের চলাচলে কষ্ট সৃষ্টি করে, অনেক দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ রাস্তায় আটকে থাকে। আমি একাধিকবার তাদের অনুরোধ করেছি, আপনারা এই কাজ করবেন না।’
ফেসবুকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের হরতাল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অতীতেও তারা এভাবে প্রোগ্রাম (কর্মসূচি) দিয়েছে। পুরো শহরে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা আতঙ্কিত হবেন না, এমন কিছু ঘটবে না।’
পরে ডিএমপি কমিশনার তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ