‘কবজিকাটা’ বাহিনীর প্রধান আনোয়ারসহ গ্রেপ্তার ৩: র্যাব
Published: 18th, February 2025 GMT
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জ থেকে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
সংস্থাটি বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন আনোয়ার হোসেন (৩৬)। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবরের আলোচিত সন্ত্রাসী ‘কবজিকাটা বাহিনীর’ প্রধান। গ্রেপ্তার অপর দুজন হলেন মো. ইমন (২০) ও মো. ফরিদ (২৭)। তাঁরা আনোয়ারের সহযোগী। আনোয়ারের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী বাহিনী মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আলোচনায় আসে।
তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল সোমবার র্যাব-২ এই তিন ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আনোয়ারের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক আইনের ৯টি মামলা আছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কয়েকটি ঘটনা লক্ষ করা যায়। এসব ঘটনায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছিল। এর আগে কয়েকজন সন্ত্রাসী মোহাম্মদপুরে এক যুবকের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় কবজিকাটা বাহিনীর প্রধান আনোয়ারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র্যাব কর্মকর্তা খালিদুল হক বলেন, আনোয়ার মোহাম্মদপুর এলাকায় কবজিকাটা নামের দুর্ধর্ষ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা হাউজিং, আদাবরের শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেক, নবোদয় হাউজিং এলাকায় নানা অপরাধে জড়ান এই বাহিনীর সদস্যরা। আনোয়ার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতেন।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এই দুই ব্যক্তির নাম মো.ইমন ও মো. ফরিদ। তাঁরা আনোয়ারের সহযোগী
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র কবজ ক ট এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।