সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জ থেকে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‍্যাব।

সংস্থাটি বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন আনোয়ার হোসেন (৩৬)। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবরের আলোচিত সন্ত্রাসী ‘কবজিকাটা বাহিনীর’ প্রধান। গ্রেপ্তার অপর দুজন হলেন মো. ইমন (২০) ও মো. ফরিদ (২৭)। তাঁরা আনোয়ারের সহযোগী। আনোয়ারের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী বাহিনী মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আলোচনায় আসে।

তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল সোমবার র‍্যাব-২ এই তিন ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আনোয়ারের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক আইনের ৯টি মামলা আছে।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কয়েকটি ঘটনা লক্ষ করা যায়। এসব ঘটনায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছিল। এর আগে কয়েকজন সন্ত্রাসী মোহাম্মদপুরে এক যুবকের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় কবজিকাটা বাহিনীর প্রধান আনোয়ারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

র‍্যাব কর্মকর্তা খালিদুল হক বলেন, আনোয়ার মোহাম্মদপুর এলাকায় কবজিকাটা নামের দুর্ধর্ষ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা হাউজিং, আদাবরের শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেক, নবোদয় হাউজিং এলাকায় নানা অপরাধে জড়ান এই বাহিনীর সদস্যরা। আনোয়ার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতেন।

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এই দুই ব্যক্তির নাম মো.

ইমন ও মো. ফরিদ। তাঁরা আনোয়ারের সহযোগী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র কবজ ক ট এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ