আওয়ামী লীগ এর ডাকা অবৈধ হরতালের প্রতিবাদে বন্দরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় মুছাপুর ইউনিয়ন বারপাড়া এলাকায় বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সভায় আওয়ামী লীগের দোসর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের এর প্রেতাত্মাদের হুশিয়ার করে নারায়ণ গঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিন আহমেদ বলেন শেখ হাসিনার দোসর নিষিদ্ধ ছাএলীগ যে হরতালের ডাক দিয়েছিলো তার কোন সুফল পাওয়া যায়নি তার জন্য আমি এই শান্তিময় দেশে অরাজকতা সৃষ্টি লক্ষে যারা এ ধরনের কাজ করে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবেনা।

 দেশের প্রতিটা জেলায় যে হরতালের ডাক দিয়েছিলো আজকে আর যদি কোন দিন এই ধরনের আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা হরতাল ডাক দেয় এবং দেশটাকে অশান্ত করে তুলে দেশের মানুষ ও নেতা কর্মীদেরকে সাথে  নিয়ে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।

এসময় তিনি আরো বলেন শুনেছি সেলিম ওসমানের পালিত ছেলে মাকসুদের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা চোরা গোপ্তা ভাবে জ্বালাও পোড়াও করছেন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য  বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন আমরা এ দেশে শান্তি চাই, এ দেশের মানুষ কে ভোট অধিকার দিতে চাই, এই খুনি হাসিনার প্রেতাত্মা দের আর যদি এই ধরনের হরতাল সভা সমাবেশ করার চিন্তা করে তাহলে তাদের  হাত-পা ভেঙে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। এবং এদেশে আর কোন দিন তাদের ঠাই দেওয়া হবে  না। 

আজকে  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান আমাদের যে নির্দেশ দিবে আমরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব এই সময় আজকে অন্যদের মধ্যে এই বিক্ষোভ মিছিল এ অংশ নেন বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি  সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সহ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আপন,ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সালাউদ্দিন আহমেদ অনিক,মুসাপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নুর আলম,বন্দর উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা উজ্জ্বল মিয়া,শামীম মিয়া, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি র সাধারণ সম্পাদক মহাসিন মিয়া,মুসাপুর ইউনিয়ন বিএনপি র সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম কলাগাছিয়া ৪নং ওর্য়াড  বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেন প্রমুখ। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ হরত ল র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ