Prothomalo:
2025-06-16@11:13:21 GMT

হাজং ভাষা রক্ষায় অন্তরের লড়াই

Published: 23rd, February 2025 GMT

হাজং ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। হাজং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর যে কয়েক হাজার মানুষ বেঁচে আছেন, তাঁদের মধ্যেও এ ভাষায় কথা বলার চর্চা কম। ভাষাটি টিকিয়ে রাখতে ছয় বছর ধরে লড়াই করছেন এক তরুণ। বয়স্কদের কাছ থেকে ভাষা সংগ্রহ করে লিপিবদ্ধ করে রাখছেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। শিশু, নারী–পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ—সবার সঙ্গে কথা বলছেন। গল্পচ্ছলে শেখাচ্ছেন হাজং ভাষার শব্দ। ইতিমধ্যে ৮২৬টি হাজং শব্দ তিনি লিপিবদ্ধ করতে পেরেছেন।

একটি ভাষা টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে শামিল হওয়া এই তরুণের নাম অন্তর হাজং (২৭)। বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী খুজিগড়া গ্রামে। অন্তরের স্বপ্ন, সরকারি উদ্যোগে হাজং ভাষাটি বইপুস্তকে লিপিবদ্ধ হবে একদিন।

ছুটে চলেন গ্রামের পর গ্রাম

অন্তরের বাবা রহিন্দ্র হাজং ও মা ইন্দুবালা হাজং দিনমজুর। তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে অন্তর সবার ছোট।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্তর হাজংয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তিনি। হাজং ভাষা রক্ষায় নেত্রকোনা ছাড়াও শেরপুর ও সুনামগঞ্জ সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামে ছুটে চলেছেন। এ পর্যন্ত তিনি অন্তত ১০১টি গ্রামে হাজং ভাষা শেখানোর চেষ্টা করেছেন। দরিদ্র পরিবারের এই তরুণ নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে যে টাকা পান, সেখান থেকে লেখাপড়ার খরচ রেখে বাকি টাকা তাঁর এই ভাষা শেখানোর কাজের পেছনে ব্যয় করেন।

কীভাবে এ কাজে ঝুঁকলেন জানতে চাইলে অন্তর হাজং জানান, হাজংদের সবাই বাংলা ভাষায় নির্ভরশীল হতে হতে নিজেদের ভাষাটাই ভুলতে বসেছেন। বছর ছয়েক আগে এ বিষয়টি তাঁকে খুব আন্দোলিত করে। তখন থেকে তিনি নিজেদের ভাষা বিস্তারে কাজে নেমে পড়েন। প্রথমে তিনি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বগাউড়া, গোপালপুর, ছনগড়া, আড়াপাড়া, বিজয়পুর, লক্ষ্মীপুর, ভবানীপুর; কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা, নলচাপড়াসহ সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোতে হাজং ভাষার চর্চা করানো শুরু করেন। কখনো বাড়ির উঠানে, কখনো গাছের নিচে, যখন যেখানে সুবিধা সেখানেই তিনি গ্রামের শিশু থেকে সব বয়সী মানুষদের হাজং ভাষা রপ্ত করানোর কাজ করেন। ধীরে ধীরে নেত্রকোনা ছাড়াও শেরপুর ও সুনামগঞ্জের ১০১টি গ্রামে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজারের মতো হাজং জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কাছে যেতে থাকেন।

হাজংদের গ্রামে একদিন

৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর হাজংয়ের বাড়ি খুজিগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর বাড়ির উঠানে ত্রিপল বিছিয়ে হাজং সম্প্রদায়ের ছেলে, মেয়ে, গৃহিণীসহ বিভিন্ন বয়সী ২৫ জন বসে আছেন। অন্তর দাঁড়িয়ে তাঁদের নানা শব্দ ও বাক্য শেখাচ্ছেন। তিনি কখনো গল্পের ছলে, কখনো হাজং ভাষায় গীত করে, কখনো আবার গান বা কবিতার ছলে শেখাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরাও বেশ মজা পাচ্ছেন।

খুজিগড়া গ্রামের বাসিন্দা গৃহিণী পুষ্পা রানী হাজং বলেন, ‘আমাদের মায়েরা বা ঠাকুর মায়েরা নিজেদের মধে৵ হাজং ভাষাতেই কথা বলতেন। ছোটবেলায় আমরাও কিছু কিছু বলতাম; কিন্তু এখন তো প্রায় সবাই বাংলাতেই কথা বলি। আমাদের সন্তানেরাও বাংলাতেই সব সময় কথা বলে। এ ভাষাটা এখন মরে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া হাজং ভাষা টিকিয়ে রাখতে অন্তর শিখিয়ে যাচ্ছে।’

১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্তত ৮২৬টি হাজং শব্দ অন্তর সংগ্রহ করেছেন। এসব শব্দ তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ছাড়াও বিভিন্ন গান, গীত, কেচ্ছা–কাহিনি, পালা, পূজা-অর্চনায় ব্যবহৃত মন্ত্র ও শাস্ত্রীয় পুস্তক থেকে সংগ্রহ করেছেন। সব কটি শব্দই তিনি ডায়েরিতে বাংলায় লিখে রেখেছেন। তিনি জানান, বাংলার সঙ্গে হাজং ভাষার মিল থাকায় এ কাজটা অনেকটাই সহজ হচ্ছে।

উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ

হাজং ভাষা রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ দরকার বলে মন্তব্য করলেন বিপিনগঞ্জ বাগাউড়া গুচ্ছগ্রাম মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলেস্টিন রিছিল। তিনি বলেন, ‘আমার স্কুলের প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী গারো ও হাজং সম্প্রদায়ের। তাদের মধ্যে হাজং শিক্ষার্থী ৩০ শতাংশ। অন্তর হাজং এই স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সপ্তাহে এক দিন এখানে এসে হাজং ভাষা শেখান।’

অন্তর হাজং বলেন, ‘গত ছয় বছরে ১০১টি গ্রামে গিয়ে হাজং ভাষা শেখাচ্ছি; কিন্তু আমি একা এত গ্রামে যত দিন যাওয়া প্রয়োজন, সেটি যেতে পারছি না। বারবার তাদের নিয়ে বসা দরকার; কিন্তু ততটা পারছি না। আমার পরিবার দরিদ্র, এত টাকা-পয়সাও নেই। তবে আমি আমার সাধ্যমতো ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’ গবেষণার মাধ্যমে বর্ণ তৈরি করে হাজং ভাষা রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

বিরিশিরির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকার সুজন হাজং প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাষা হচ্ছে সংস্কৃতির প্রাণ, সেটি হারিয়ে গেলে একটি জাতিসত্তার প্রাণভোমরা হারিয়ে যায়। অন্তর হাজং যে কাজটি করছেন, তার জন্য সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি যেহেতু হাজং ভাষার কোনো বর্ণমালা নেই। তাই বাংলা বর্ণমালায় হাজং ভাষার শব্দাবলি লিপিবদ্ধ করে প্রাক্‌-প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হোক। এতে এই ভাষা বাঁচানো সহজ হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৩ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৩ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। সংশোধিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৩ জুন পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা শেষ হবে ৩০ জুলাই।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিম স্বাক্ষরিত এই পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি ৩ জুন প্রকাশ করা হয়। বিশেষ প্রয়োজনে বোর্ড কর্তৃপক্ষ সময়সূচি পরিবর্তন করতে পারবে।

পরীক্ষার হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেখাতে হবে। পরীক্ষার জরুরি তথ্য পেতে প্রতিদিন অন্তত তিনবার (সকাল, দুপুর, রাত) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে বলা হয়েছে পরীক্ষার্থীর। ব্যবহারিক পরীক্ষার স্থান, তারিখ ও সময় পরে জানানো হবে।

পরীক্ষার কোড: ১১০২। পরীক্ষা আরম্ভের সময়: বেলা ২টা।

কোন পরীক্ষা কবে

২৩ জুন: বাংলা জাতীয় ভাষা (১৩১০০১)/ বাংলা জাতীয় ভাষা বিকল্পপত্র (১৩১০০৩)—আবশি৵ক

২৪ জুন: মনোবিজ্ঞান (১২৩৪০১)/ক্রীড়াবিজ্ঞান (১২৪৬০১)— তৃতীয় পত্র

২৫ জুন: ইসলামিক স্টাডিজ (১২১৮০১)/অ্যাপ্লায়েড হোম ইকোনমিকস (১২৬০০৯)/ব্যবস্থাপনা (১২২৬০১)— তৃতীয় পত্র

২৬ জুন: বাংলা সাহিত্য (ঐচ্ছিক) (১২১০০১)/ইংরেজি (ঐচ্ছিক) (১২১১০৫)/বেসিক হোম ইকোনমিকস (১২৬০০১)/আরবি (১২১২০১)/পালি (১২১৪০১)/সংস্কৃত (১২১৩০১)— তৃতীয় পত্র

২৯ জুন: গণিত (১২৩৭০১)/উচ্চাঙ্গসংগীত (১২৪৫০১)/গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান (১২৩৮০১)— তৃতীয় পত্র

৩০ জুন: ভূগোল ও পরিবেশ (১২৩২০১)/জেনারেল সায়েন্স ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন (১২৬০০৫)/হিসাববিজ্ঞান (১২২৫০১)— তৃতীয় পত্র

১ জুলাই: পরিসংখ্যান (১২৩৬০১)/রবীন্দ্রসংগীত (১২৪৫০৩/নজরুলসংগীত (১২৪৫০৫)/লোকসংগীত (১২৪৫০৭)—তৃতীয় পত্র

২ জুলাই: ইতিহাস (১২১৫০১)/ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি (১২১৬০১)/রসায়ন (১২২৮০১)—তৃতীয় পত্র

৩ জুলাই: অর্থনীতি (১২২২০১)/প্রাণিবিজ্ঞান (১২৩১০১)— তৃতীয় পত্র

৭ জুলাই: রাষ্ট্রবিজ্ঞান (১২১৯০১)/ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং (১২২৪০১)/উদ্ভিদবিজ্ঞান (১২৩০০১)— তৃতীয় পত্র

৮ জুলাই: গার্হস্থ্য অর্থনীতি (১২৩৫০১)/ড্রামা অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ (১২৫১০১)—তৃতীয় পত্র

১০ জুলাই: দর্শন (১২১৭০১)/মৃত্তিকাবিজ্ঞান (১২৩৩০১)—তৃতীয় পত্র

১৪ জুলাই: সমাজবিজ্ঞান (১২২০০১)/সমাজকর্ম (১২২১০১)/মার্কেটিং (১২২৩০১)/পদার্থবিজ্ঞান (১২২৭০১)— তৃতীয় পত্র

১৫ জুলাই: অর্থনীতি (১২২২০৩)/প্রাণিবিজ্ঞান (১২৩১০৩)— চতুর্থ পত্র

১৬ জুলাই: ইসলামিক স্টাডিজ (১২১৮০৩)/অ্যাপ্লায়েড হোম ইকোনমিকস (১৮৬০১১)/মার্কেটিং (১২২৩০৩)— চতুর্থ পত্র

১৭ জুলাই: ইতিহাস (১২১৫০৩)/ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি (১২১৬০৩)/রসায়ন (১২২৮০৩)/হিসাববিজ্ঞান (১২২৫০৩)—চতুর্থ পত্র

২০ জুলাই: দর্শন (১২১৭০৩)/মৃত্তিকাবিজ্ঞান (১২৩৩০৩)— চতুর্থ পত্র

২১ জুলাই: সমাজবিজ্ঞান (১২২০০৩)/সমাজকর্ম (১২২১০৩)/পদার্থবিজ্ঞান (১২২৭০৩)—চতুর্থ পত্র

২২ জুলাই: রাষ্ট্রবিজ্ঞান (১২১৯০৩)/ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং (১২২৪০৩)/উদ্ভিদবিজ্ঞান (১২৩০০৩)— চতুর্থ পত্র

২৩ জুলাই: ভূগোল ও পরিবেশ (১২৩২০৩)/জেনারেল সায়েন্স ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন (১২৬০০৭)— চতুর্থ পত্র

২৪ জুলাই: মনোবিজ্ঞান (১২৩৪০৩)/ক্রীড়াবিজ্ঞান (১২৪৬০৩)/ব্যবস্থাপনা (১২২৬০৩)— চতুর্থ পত্র

২৭ জুলাই: গণিত (১২৩৭০৩)/উচ্চাঙ্গসংগীত (ব্যবহারিক) (১২৪৫০২)/গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান (১২৩৮০৩)— চতুর্থ পত্র

২৮ জুলাই: বাংলা সাহিত্য (ঐচ্ছিক) (১২১০০৩)/ইংরেজি (ঐচ্ছিক) (১২১১০৭)/বেসিক হোম ইকোনমিকস (১২৬০০৩)/আরবি (১২১২০৩)/পালি (১২১৪০৩)/সংস্কৃত (১২১৩০৩)— চতুর্থ পত্র

২৯ জুলাই: গার্হস্থ্য অর্থনীতি (১২৩৫০৩)/ড্রামা অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ (১২৫১০৩)— চতুর্থ পত্র

৩০ জুলাই: পরিসংখ্যান (১২৩৬০৩)/রবীন্দ্রসংগীত (ব্যবহারিক) (১২৪৫০৪)/নজরুলসংগীত (ব্যবহারিক) (১২৪৫০৬)/লোকসংগীত (ব্যবহারিক) (১২৪৫০৮)—চতুর্থ পত্র

* জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেখুন:

সম্পর্কিত নিবন্ধ