ফেডারেল কর্মীদের মাস্কের ইমেইল: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাজের হিসাব দাও, নইলে চাকরি যাবে
Published: 23rd, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেশটির ফেডারেল সরকারের কর্মচারীদের কাছে ই–মেইল পাঠিয়েছে। এই ই–মেইলে কর্মচারীদের আগের সপ্তাহের কাজের বিবরণ আগামীকাল সোমবার রাতের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। তা না হলে তাঁদের চাকরি হারানোর ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে ই–মেইলে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান ধনকুবের ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এই ই–মেইল পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ই–মেইলের অনুরোধে সাড়া না দেওয়ার বিষয়টিকে কর্মচারীর পদত্যাগ হিসেবে দেখা হবে।
মাস্ক তাঁর এক্স পোস্টে বলেন, সব ফেডারেল কর্মচারী শিগগিরই একটি ই–মেইল পাবেন। এই ই–মেইলে তাঁরা গত সপ্তাহে কী কাজ করেছেন, তা বোঝার জন্য অনুরোধ থাকবে। ই–মেইলে সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তা পদত্যাগ হিসেবে গণ্য হবে।
ট্রাম্প তাঁর নিজের ট্রুথ সোশ্যাল নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় মাস্ক তাঁর পোস্টটি দেন।
ট্রাম্প তাঁর পোস্টে বলেন, ২৩ লাখের শক্তিশালী ফেডারেল কর্মী বাহিনীর আকার কমানো ও ঢেলে সাজানোর প্রচেষ্টায় ডিওজিইর আরও আক্রমণাত্মক হওয়া উচিত।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনসহ অন্য ফেডারেল সংস্থাগুলোর কর্মচারীদের কাছে এই ই–মেইল পাঠানো হয়েছে। ই–মেইলের বিষয়বস্তুর শিরোনাম: ‘গত সপ্তাহে আপনি কী করেছেন?’
ফেডারেল সংস্থাগুলোর কর্মচারীদের কাছে পাঠানো এই ই–মেইল দেখার সুযোগ হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। ই–মেইলে গত সপ্তাহে কর্মক্ষেত্রে কর্মচারী কী কাজ করেছেন, তার সারাংশ পাঁচটি বুলেট পয়েন্টে দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এই ই–মেইলের অনুলিপি কর্মচারীদের ব্যবস্থাপকদের দিতে বলা হয়েছে।
মার্কিন সরকারের অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের মানবসম্পদ ঠিকানা দিয়ে এই ই–মেইল পাঠানো হয়েছে। আর ই–মেইলের জবাব দেওয়ার জন্য আগামীকাল রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে কর্মচারীদের।
কোনো ফেডারেল কর্মচারী মাস্কের অনুরোধে সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তিনি কোন আইনি ভিত্তিতে তাঁকে (কর্মচারী) বরখাস্ত করবেন, তা স্পষ্ট নয়। আবার যেসব কর্মচারী বিধিমোতাবেক গোপনীয় কাজের বিবরণ দিতে পারেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে, তা–ও পরিষ্কার নয়।
কিছু ফেডারেল বিচার বিভাগীয় কর্মচারীও গতকাল এই ই–মেইল পেয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানাশোনা আছে—এমন ব্যক্তিরা এ তথ্য জানিয়েছেন। যদিও আদালতব্যবস্থা মার্কিন সরকারের নির্বাহী শাখার অংশ নয়।
মার্কিন আদালতের প্রশাসনিক কার্যালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। অন্যদিকে ডিওজিইর মুখপাত্রও তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।
মার্কিন ফেডারেল কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়ন এএফজিই এক বিবৃতিতে বলেছে, যেকোনো বেআইনি চাকরিচ্যুতিকে তারা চ্যালেঞ্জ করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ড র ল কর ম র অন র ধ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ