স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে গণপদযাত্রা শুরু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এ গণপদযাত্রা শুরু হয়ে টিএসসি পেরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে এগোচ্ছে।

এর আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দুপুর সোয়া দুইটার দিকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

জননিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অবিলম্বে ধর্ষণ ও নিপীড়নের সকল ঘটনার বিচার এবং সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এ গণপদযাত্রা হচ্ছে।

পদযাত্রা শুরুর আগে শহীদ মিনারে ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ‘পুরুষের ক্ষমতা, ভেঙে হোক সমতা’, ‘নারী থেকে নারীতে, ছুঁয়ে যাক প্রতিবাদ’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেওয়া হয়।

এর আগে শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে তরুণ ও শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির মূল ব্যানার ও বিভিন্ন পোস্টার-প্ল্যাকার্ড লিখেন। এ সময় পোস্টার-প্ল্যাকার্ডে ‘পাহাড় থেকে সমতল, সকল ধর্ষণের বিচার চাই’, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি, ধর্ষণের রাজনীতি’, ‘আমরা জন্ম থেকে শহীদ’, ‘তনু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার কই’—ইত্যাদি প্রতিবাদী স্লোগান লেখা হয়।

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যেমন বাংলাদেশ আশা করা হয়েছিল, তেমন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে নারীদের বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ হচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। ঘরে বসে থাকলেও নিরাপদ বোধ করার সুযোগ নেই। তাই রাজপথে নামা হয়েছে।

পদযাত্রায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এখন পর্যন্ত আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। উপদেষ্টার নেতৃত্বে থাকা পুলিশও নির্লিপ্ত। এ অবস্থায় নারীরা অনিরাপদ। তাই আমরা চাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে গদি ছেড়ে দেবেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ