ঢাবিতে মধ্যরাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 24th, February 2025 GMT
সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই, ডাকাতির প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি করেন তারা।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বনশ্রী ও মোহাম্মদপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনার পর রাত ১টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ‘জুলাইয়ের রক্তের দাম চাই, নিরাপদ দেশ চাই’, ‘সারা দেশে অপরাধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর গদি ছাড়’, ‘দফা এক দাবি এক, জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ’, ‘মা বোনদের নিরাপত্তা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকটি বড় অপরাধের ঘটনা সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এগুলো প্রতিরোধে কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। আজো মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, ধানমন্ডিতে ছিনতাইকারী ও ডাকাতদের উপদ্রব ছিল। কেউ বাসা থেকে বের হতে নিরাপদবোধ করছে না, মানুষ আতঙ্কবোধ করছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে।
মিছিলে থাকা একজন শিক্ষার্থী বলেন, “সারা দেশে ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতার জন্য আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।”
বিক্ষোভের পরপরই রাত ৩টায় বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাসায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে তিনি বলেন, “আগামীকাল থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়বে। যেখানেই ঘটনা ঘটবে সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারো গাফিলতি পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার সব ধরনের চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে তারা প্রচুর টাকা ব্যবহার করছে। তবে আমরা শক্ত হাতে তাদের প্রতিহত করব। আওয়ামী লীগের যারা এসব কাজ করছে, তাদের ঘুম হারাম করে দেব।”
এর আগে, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ২০০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ‘শান্ত এলাকা’ নামে পরিচিত বনশ্রীতে হঠাৎ করে এমন ঘটনায় ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে রামপুরা, আফতাবনগরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পদত য গ বনশ র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?