ওয়ালটন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ। 

গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

আইসিবি চেয়ারম্যান বলেন, “ওয়ালটন সব ধরনের পণ্যই তৈরি করছে। বিশাল জায়গাজুড়ে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্যের অত্যাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টস গড়ে তুলেছেন তারা। ওয়ালটনের পণ্য এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে। দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি ৪০টির বেশি দেশে নিজেদের তৈরি পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। এসব দেশ ওয়ালটন পণ্যের গুণগত মান এবং মূল্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতা যাচাই করেই নিচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় সুনাম।” 

শনিবার সকালে আইসিবির চেয়ারম্যানসহ সদ্য বিদায়ী ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো.

আবুল হোসাইন এবং আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মাহমুদা আক্তার ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে পৌঁছালে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ আলী এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম। 

অতিথিরা ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টারসহ ওয়ালটনের মেটাল কাস্টিং, কম্প্রেসর, রেফ্রিজটারেটর ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ইউনিট সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। 

পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “ওয়ালটন ব্র্যান্ড এখন সারা বিশ্বে সমাদৃত। এটা বাংলাদেশের গর্বের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আগে যেসব পণ্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হতো, এখন সেসব ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে ওয়ালটন। দেশের সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও একটি ওয়ালটন। এভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলছে ওয়ালটন।”

সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওয়ালটন নিয়ে প্রচারণার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইসিবির চেয়ারম্যান বলেন, “ওয়ালটনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে কোনো লাভ নেই। যারা সমালোচনা করছেন, তাদের উচিত, ওয়ালটনের মতো এমন একটি উৎপাদনমুখী শিল্প তৈরি করে উদাহরণ সৃষ্টি করা। বরং, সবার দেখতে হবে ওয়ালটন পণ্যের গুণগত মান ঠিক আছে কি না, সাশ্রয়ী দামে তারা গ্রাহকের হাতে পণ্য তুলে দিতে পারছে কি না এবং প্রতিবছর শেয়ারহোল্ডারদের ভালো ডিভিডেন্ড দিতে পারছে কি না। এসব কাজ প্রতিনিয়ত সফলতার সঙ্গে করে দেখাচ্ছে ওয়ালটন।”

ঢাকা/একরাম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইস ব

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ