সীমান্তে রাখাইন আর্মির সঙ্গে আরসার সংঘাত বাড়ছে, দাবি মিয়ানমারের গণমাধ্যমের
Published: 27th, February 2025 GMT
দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই-সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের ২৭০ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এরপরও স্বস্তিতে নেই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। প্রায় প্রতিদিন মংডুসহ রাজ্যের আশপাশের এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে সে দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।
সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যের অধিকৃত মংডু টাউনশিপে আরাকান আর্মির অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। এর প্রতিক্রিয়ায় আরাকান আর্মি মংডুর অভ্যন্তরে আরসার ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে টহল বাড়িয়েছে। নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি জেলেদের নৌকাসহ অপহরণের ঘটনাও ঘটিয়েছে।
গত কয়েক দিনে মিয়ানমারের কয়েকটি গণমাধ্যম ঘেঁটে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত শুরুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে আসা সেখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আরাকান বন্দর দখলের জন্য আরাকান আর্মি কয়েক দিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছে। সরকারি বাহিনীর বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে তারা। আবার টেকনাফের বিপরীতে মংডুতেও আরাকান আর্মির সঙ্গে নতুন করে সংঘাতে জড়িয়েছে আরসা।
রাখাইন রাজ্যের গণমাধ্যম নারিনজারা নিউজে আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার বিকেলে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিথুয়ের কাছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি এবং একটি নৌ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালিয়েছে। নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের কাছে সামরিক কাউন্সিলেও আক্রমণ করা হয়েছে। লড়াই তীব্র ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারী কামান এবং ড্রোন থেকে গুলি চালানো হয়েছিল। প্রায় ২০ জন সামরিক কাউন্সিল সদস্যকে বন্দী করা হয়েছে।
মিয়ানমারের নারিনজারা নিউজে প্রকাশিত আরসা ও আরকান আর্মির সংঘাতের খবর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র খ ইন র জ য র সশস ত র গ ষ ঠ আর ক ন আর ম ন আর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল