শ্যামনগরে সাবেক ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে মৎস্যঘের দখলের অভিযোগ
Published: 3rd, March 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে একটি চিংড়ির ঘের দখলের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে আটুলিয়া ইউনিয়নের বায়ারসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত শনিবার ১৯ বিঘার ঘেরটি দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অভিযোগকারী বাবুরাম হাউলী। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম তৈয়বুর রহমান। তিনি উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।
জিডিতে বাবুরাম হাউলী উল্লেখ করেন, শ্যামনগরের তালবাড়িয়া মৌজার ৬ দশমিক ৪৮ একর জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য চাষ করে আসছেন তাঁরা। সম্প্রতি আলাউদ্দীন সরদার, যতী সরদার, তৈয়বুর রহমান ও মিজানুর রহমান নামের ব্যক্তিরা জোর করে ঘেরটি দখলের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। এরই জেরে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জমিতে কাজের সময় ওই ব্যক্তিরা ঘেরে উপস্থিত হন। তাঁরা অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। এ সময় প্রতিবাদ করলে বাদী বাবুরামকে মারতে উদ্যত হন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাঁকে নানা হুমকিও দেওয়া হয়।
বাবুরাম জানান, থানায় জিডি করার এক দিন পরই গতকাল সন্ধ্যায় তৈয়বুরের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২২ জন তাঁর ওই ঘের দখল করেছেন।
এ বিষয়ে তৈয়বুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ওই জমি এত দিন আওয়ামী লীগের লোকজন বাবুরাম হাউলীর মাধ্যমে দখল করেছিলেন। যাঁদের জমি তাঁরা (মিজানুর রহমান ও দেবল হাউলী) এখন দখলে গেছেন। মৎস্যঘের কিংবা দখলের প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে তিনি জানান, মিজানুর রহমান ও দেবল হাউলী তাঁকে ডেকেছেন। আজ সোমবার তাঁদের সঙ্গে ঘেরে যাবেন তিনি।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান ও দেবল হাউলী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ওই জমি তাঁদের দখলে ছিল। এখন বাবুরাম হাউলীরা ওই জমি দখল করতে চাচ্ছেন। ওই জমি যাতে বাবুরাম হাউলীরা দখল নিতে না পারেন, এ জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতা তৈয়বুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, দুই দিন আগে থানায় জিডি হয়েছে। গতকাল ঘের দখল হয়েছে, এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। দখল করে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন র রহম ন ও শ য মনগর ঘ র দখল ছ ত রদল দখল র
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।