রাজধানীর মালিবাগে বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী এবং এলিফ্যান্ট রোডে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইফতারের আগে ঢাকায় এই দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। দুজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, মালিবাগে বাসের ধাক্কায় নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম পলাশ মোল্লা (৩৬)। তিনি পেশায় মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। আর এলিফ্যান্ট রোডে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল মান্নান (৬১)। এলিফ্যান্ট রোডে তাঁর একটি টেইলার্স আছে।

মালিবাগে দুর্ঘটনার পর পলাশ মোল্লাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সৈয়দ জুলফিকার জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে মালিবাগের চৌধুরীপাড়া এলাকায় ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় পলাশ গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পলাশের ভাতিজা রেজোয়ান মোল্লা বলেন, মতিঝিলে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে তাঁর চাচা পল্লাশ মোল্লার। তিনি পরিবার নিয়ে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় থাকেন। মতিঝিলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে তাঁর চাচা দুর্ঘটনার শিকার হন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নড়াইল জেলায়।

এদিকে এলিফ্যান্ট রোডে দুর্ঘটনায় নিহত আবদুল মান্নানকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো.

হাবিব প্রথম আলোকে জানান, তিনি (হাবিব) একজন ব্যবসায়ী। নিহত মান্নানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই তাঁর প্রতিষ্ঠান। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মান্নান ইফতার আনার জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। রাস্তা পারাপারের সময় একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেল তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি পরিবার নিয়ে জিগাতলায় বসবাস করতেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, আলাদা দুটি দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দুটি থানাকে জানানো হয়েছে। তাঁরা পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ফ য ন ট র ড দ র ঘটন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ