আলাদাভাবে ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা চান ১৫০০ মেডিকেল শিক্ষার্থী
Published: 5th, March 2025 GMT
চলতি মাসেই আলাদাভাবে ফাইনাল পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষা দিতে চান ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের অকৃতকার্য এবং অনিয়মিত প্রায় ১৫০০ মেডিকেল শিক্ষার্থী। এ দাবিতে বুধবার সকালে রাজধানীর বিজয় নগরে বিক্ষোভ করেন তারা। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সামনে অবস্থান নেন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী। সাড়ে চারটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনে অবস্থান করেন। এ সময়ে ওই ভবনে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারেননি।
আন্দোলনরতরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ২০১৮-২০১৮ সেশনের ফাইনাল প্রফেশনাল সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা আয়োজনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি করছেন তারা।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আনন্দ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষা গত বছর নভেম্বরে নেওয়ার কথা ছিল। এখন সেই পরীক্ষা আগামী মে মাসে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএমডিসির। তবে এ মাসে ২০১৯-২০২০ ব্যাচের সঙ্গে আমরা পরীক্ষা নিতে চাচ্ছি। আমরা আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলছি, তবে বিএমডিসি নিচ্ছে না। আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে এই আন্দোলন।
এই শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পরের ব্যাচকে আমাদের আগে আনতে চাচ্ছে। আর আমাদের সময় পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। দুই ব্যাচের পরীক্ষা একসঙ্গে নিতে চাচ্ছে যেখানে নিয়ম অনুযায়ী আমরা আলাদা একটা পরীক্ষা পাই। আলাদা পরীক্ষা আমার ন্যায্য দাবি।
দুই ব্যাচের পরীক্ষা একসঙ্গে নিলে কী কী সমস্যা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো আলাদা একটা পরীক্ষা পাই। সেটা একসঙ্গে হবে কেন? আমাদের যদি এখন আরও দুই মাস পিছিয়ে দেয় তাহলে এমডি, এমএস, এফসিপিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব না। আমরা অলরেডি দেড় বছর পিছিয়ে গেছি, মে মাসে পরীক্ষা নিলে আরও পিছিয়ে যাব।
বিএমডিসি রেজিস্ট্রার চিকিৎসক লিয়াকত আলী বলেন, গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি এমন ১৫০০ মতো শিক্ষার্থী আছে। মে মাসে পরীক্ষার যে সূচি হয়, সেখানেও অনুত্তীর্ণদের অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে। এটাই হলো নিয়ম, এর বাইরে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা চাচ্ছে একটা মধ্যবর্তী পরীক্ষা, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত একটা কাজ। পরীক্ষা কীভাবে নেবে, রুটিন কী হবে সেটা ঠিক করে ডিন অফিস।
বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের নভেম্বর মাসে। ওই পরীক্ষায় প্রায় ১৫০০ মতো পরীক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হন। পাঠ্যক্রম অনুযায়ী তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষা আগামী মাসে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে শিক্ষার্থীরা তা এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ক ষ স পর ক ষ ব এমড স ১৫০০ ম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।