দেশের ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করা এবং তারপর জাতীয়করণ করার বিষয়ে উপদেষ্টা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন সদ্য বিদায় নেওয়া শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এখন সেই ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। প্রথম পর্যায়ে সরকারি অনুদান পাওয়া ১ হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে চলতি অর্থ বছরেই এই সুবিধার আওতায় আনা হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে অন্য মাদ্রাসাগুলোতে এই সুবিধা দেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত এবং জাতীয়করণের বিষয় ছাড়াও মাদ্রাসার ছাত্রদের উপবৃত্তির আওতায় আনাসহ মাদ্রাসার উন্নয়নে আরও বেশ কিছু বিষয়ে উপদেষ্টা পর্যায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণের ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবিতে কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট। গত জানুয়ারি শাহবাগ এলাকায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় লাঠিপেটাও করে পুলিশ। এতে এক নারীসহ ছয়জন আহত হন। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক শাহবাগ এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের কাছে গিয়ে সরকারের আশ্বাসের কথা জানিয়েছিলেন। তার আগে মন্ত্রণালয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয়। তখন মাসুদুল হক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রথমে পর্যায়ক্রমে এসব মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করা হবে, তারপর জাতীয়করণ করা হবে।

আরও পড়ুনবিদায় বেলায় বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সুখবর জানিয়ে গেলেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ৩ ঘণ্টা আগে

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের হিসাবে বর্তমানে কয়েক হাজার (কোডভুক্ত) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা আছে। এ ছাড়াও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাবে আরও কয়েক কয়েক হাজারের মতো মাদ্রাসা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ইবত দ য় জ ত য়করণ উপদ ষ ট পর য য় সরক র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতীকী মূল্যে কাউকে সরকারি জমি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

এখন থেকে সরকারি জমি প্রতীকী মূল্য কাউকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, সরকারি জমি যারা নিতে চাইবে যথাযথ মূল্য দিয়ে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা সম্প্রসারণের জন্য বন্ধ থাকা চট্টগ্রামের জলিল টেক্সটাইল মিলসের ৫৪.৯৯ একর জমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরের একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উপস্থান করা হয়।

এ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জলিল টেক্সটাইল মিলস তারা নিতে চাচ্ছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি প্রতীকী মূল্যে দেব না। এখন থেকে প্রতীকী মূল্যটা এভয়েড (এড়িয়ে চলা) করবো। যারাই নিতে চায় অর্থ দিয়ে নেবে। কারণ প্রতীকী মূল্যে দিলে যারা নিয়ে যায়, তারা ঠিকমত ইউটিলাইজ করে না। অনেক ক্ষেত্রে ১০ একর জমির প্রয়োজন থাকলেও প্রতীকী মূল্যের কারণে ১০০ একর জমি দরকার বলে জানানো হয়।’’

তাহলে কি জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়নি? সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাদেরকেই দেওয়া হবে, তবে মূল্যটা নির্ধারণ করে প্রস্তাব আসতে হবে।’’

এদিকে বৈঠক শেষে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি (বিওএফ) সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলের নিয়ন্ত্রণাধীন চট্টগ্রাম জেলার ভাটিয়ারিতে অবস্থিত জলিল টেক্সটাইল মিলস হস্তান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় মেসার্স জলিল টেক্সটাইল মিলস স্থাপন করা হয়। মিলের জমির পরিমাণ ৫৪.৯৯ একর। ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করার পর উইভিং এবং ডাইং বিভাগ স্থাপনের মাধ্যমে মানসম্মত উৎপাদনের জন্য ৩ বার স্বর্ণপদক লাভ করে মিলটি।

লাভজনকভাবে পরিচালিত মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতিমালার আওতায় ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মিলের সাবেক শেয়ার হোল্ডারদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। মালিক পক্ষের মধ্যে অর্ন্তকলহের কারণে ১৯৯৭ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে তৎকালীন সরকার দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর মিলটি অধিগ্রহণ করে। ওই দিন সরকার মিলের সাবেক ৪০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার সেলিম চৌধুরী গংদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে মিলটি হস্তান্তর করে।

সেলিম চৌধুরী গং মাত্র ১২ লাখ ২২ হাজার টাকা দিয়ে মিলটি অধিগ্রহণের পর হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকারি পাওনা, ৬০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা, ২০০০ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মিল চালু, অর্থ মন্ত্রণালয়, বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ না করে চুক্তির সব শর্ত লঙ্ঘন করে। সুচতুরভাবে মালিকপক্ষ ২০০০ সালের শেষের দিকে নামমাত্র ১টি ইউনিট চালু করে পরবর্তীতে শ্রম আইন বহির্ভূতভাবে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিটটিও বন্ধ করে দেয়।

এ অবস্থায় ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ মাসের মধ্যে মালিকপক্ষ মিল চালু না করলে হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকার মিলটি অধিগ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে ২০০৫ সালের ২০ নভেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিলটি বন্ধ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি জলিল টেক্সটাইল মিলস পুনঃগ্রহণ করে সরকার এবং মিলটি বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হয়।

ঢাকা/হাসনাত//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতীকী মূল্যে কাউকে সরকারি জমি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা