হঠাৎই ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এবার কি তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পালা?
মাহমুদউল্লাহর চেয়ে চার বছরের ছোট স্টিভেন স্মিথ। সেই হিসাবে চাইলে আরও এক-দুই বছর ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে পারতেন অজি তারকা। তা না করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দিলেন তিনি। অসি ব্যাটারের বিদায়ের পর দেশের ক্রিকেটে আলোচনা– স্মিথের মতো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়ার সাহস দেখাতে না পারার বিষয়টি।
এ সিনিয়র ক্রিকেটার নিজের অবসর সম্পর্কে বিসিবিকে কিছু জানাননি। তাই বাধ্য হয়ে মাহমুদউল্লাহর পরিকল্পনা জানতে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সোমবারের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে জাতীয় দল গড়া হবে। সেই বিবেচনায় মাহমুদউল্লাহকে না রাখার পক্ষে তারা। তাই এ ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানা জরুরি মনে করে বিসিবি।
আজ এ ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম। তামিম ইকবাল ছন্দে থাকার পরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন। সাকিব আল হাসানেরও বাধ্যতামূলক বিদায় হয়ে গেছে। বিসিবি কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করবেন মাহমুদউল্লাহ। তার বাস্তবায়ন দেখতে না পেয়ে দ্বিধায় পড়ে গেছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। তবে ভালো খবর, মাহমুদউল্লাহ নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছেন।
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান ফাহিম পরিচালনা পর্ষদের সোমবারের সভায় এ তথ্য দিয়েছেন। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা না করার পেছনে এটা একটি কারণ বলে মনে করেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু।
পারফরম্যান্স বিবেচনায় মাহমুদউল্লাহকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রেখেছেন জাতীয় দল নির্বাচকরা। তিনি অবসর নিলে অটো বাতিল হবে চুক্তি। নীরবে বিদায় নিতে চাইলে ২০২৫ সালের পুরো বেতন পাবেন তিনি। এ বিষয়টিও সিনিয়র ক্রিকেটারকে অবসর ভাবনায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন পরিচালকরা।
মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ও টি২০ ছেড়েছেন আগেই। গত বছর ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলে টি২০ ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন তিনি। সেই থেকে কেবল ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছেন মিডল অর্ডার এ ব্যাটার। বিসিবি চায় না ৩৯ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও থাকেন। মাহমুদউল্লাহ চাইলে জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠেয় পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নেবে বিসিবি।
মুশফিকের বিষয়টি ছিল একটু আলাদা। টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলেন তিনি। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারের টেস্ট খেলা নিয়ে আপত্তি নেই বোর্ডের। তিনি চাইলে টেস্ট ক্যারিয়ার ২০২৬ সাল পর্যন্ত টেনে নিতে পারেন। তবে ওয়ানডের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ছিলেন না মুশফিক।
এর মধ্যেই মুশফিক গতকাল রাতে তাঁর ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলও চেয়েছিল এমন কিছু। বিসিবি পরিচালক আকরাম খান মিডিয়াকে বলেছেন, ‘একজন খেলোয়াড়ই বুঝতে পারে তার ভবিষ্যৎ কী। আমরা চাই সিদ্ধান্তটা ও নিক। বেশি সমস্যা হলে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং খেলোয়াড় বসে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো।’
তবে পরিচালকদের মধ্যে ভিন্নমতই বেশি। একজন পরিচালক বলেন, ‘সবকিছুর একটা সময় আছে। আমার মনে হয়, মাহমুদউল্লাহ দেশকে অনেক দিয়েছে। তবে ভবিষ্যৎ জাতীয় দল বিবেচনা করা হলে তারা থাকবে না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল
এছাড়াও পড়ুন:
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি ঘিরে উত্তেজনা এখন চূড়ান্তে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি একটি পরিণতির লড়াই হিসেবে সমাসন্ন। তবে ঠিক এই সময়েই বড় দুঃসংবাদ এসে আঘাত হেনেছে ইংলিশ ড্রেসিংরুমে। ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ নির্ধারণী ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
বুধবার (৩০ জুলাই) ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ওভালে মাঠে নামা হচ্ছে না স্টোকসের। ম্যানচেস্টারে চতুর্থ টেস্টে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী স্টোকস ছিলেন দলের ভারসাম্য ধরে রাখার অন্যতম স্তম্ভ। তার অনুপস্থিতি তাই শুধু একজন খেলোয়াড়কে হারানো নয়, বরং একটি জয়ের প্রত্যয়ের বড় চ্যাপ্টারও হারানো।
এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন ওলি পোপ। যিনি প্রথমবারের মতো সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় দলের।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ
ওভাল টেস্টের ইংল্যান্ড দল ঘোষণা, ওভারটনের প্রত্যাবর্তন
স্টোকস ছাড়াও ওভাল টেস্টে দেখা যাবে না জোফরা আর্চার, ব্রাইডন কার্স ও লিয়াম ডসনকে। চোট ও ফিটনেস ইস্যুর কারণে তারা বাদ পড়েছেন স্কোয়াড থেকে।
অবশ্য একাদশে ফিরেছেন দুই পরিচিত মুখ জশ টাঙ ও জেমি ওভারটন। বিশেষ নজর কেড়েছেন গাস অ্যাটকিনসন। যিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মে মাসে খেলার পর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিলেন মাঠের বাইরে। সারে কাউন্টির হয়ে ফের মাঠে ফিরে জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইংল্যান্ডের পেস বিভাগে তার উপস্থিতি বাড়াবে গতি ও ধার।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন বেন স্টোকস। চার ম্যাচে তার ঝুলিতে ১৭ উইকেট। ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার ও ব্যাটে সেঞ্চুরি করে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিলেন। লর্ডসেও দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন ৭৭, নিয়েছেন আরও পাঁচ উইকেট।
তাই ইংলিশ শিবির শুধু একজন ব্যাটার বা একজন বোলার হারায়নি, তারা হারিয়েছে একজন পূর্ণাঙ্গ ম্যাচ উইনারকে। স্টোকসের মতো একজন অলরাউন্ডার যিনি প্রয়োজনের সময় ছায়ার মতো আক্রমণে নেতৃত্ব দেন এবং ব্যাট হাতে গড়েন ম্যাচের ভিত, তার অভাব যে দলকে নাড়া দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ:
জ্যাক ক্রাউলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ (অধিনায়ক), জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জ্যাকব বেথেল, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার), ক্রিস ওকস, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাঙ।
ঢাকা/আমিনুল