মুশফিক রহিম গতকাল রাতে ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁকে ভিডিওতে বিদায়ী বার্তা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। জাতীয় দলে ১৬ বছর সতীর্থ হিসেবে খেলেছেন দুজন। মুশফিককে ধন্যবাদ জানিয়ে তামিম বলেছেন, অনেকের কাছেই তিনি রোলমডেল হয়ে থাকবেন।

আরও পড়ুনআফ্রিদির বকেয়া উদ্ধারে দায়িত্ব নেবে না বিসিবি১ ঘণ্টা আগে

ভিডিওবার্তার শুরুতে তামিম বলেন, ‘আজকে এমনই একটা দিন, সাধারণত কেউ যদি কোনো সংস্করণ থেকে অবসর নেয়, সবাই স্ট্যাটাস দেয়, তাদের অনুভূতিটা বোঝায়। কিন্তু এমন একজন ব্যক্তি আজ অবসর নিলেন, যার সঙ্গে আমার ২০-২৫ বছরের অভিযাত্রা। একটা স্ট্যাটাসে আমি আসলে বোঝাতে পারতাম না, তার প্রতি আমার অনুভূতি কেমন এবং এখন আমার আসলে কেমন মনে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন মুশফিক কিছুক্ষণ আগে ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছে। মুশফিককে আমি এতটুকুই বলতে চাই যে দোস্ত, তোর সঙ্গে আমার খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে এবং আমি তোকে ধাপে ধাপে বেড়ে উঠতে দেখেছি। তোকে দেখেছি যে, সাধারণ ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেকেরই তার কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। আমি দেখেছি যে একটি ছেলে কত কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব, আমার কাছে মনে হয় যে সে সবই করেছে, এখনো করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসি করি যে, একটা মানুষ এত কষ্ট করে কেন। কিন্তু তার নিবেদন, খেলার প্রতি ভালোবাসা, এটা বিশাল। এটা আমি কথায় কোনো দিন কাউকে বোঝাতে পারব না। খেলা ছেড়ে দেওয়া ওর জন্য কত কষ্টকর, আমি যেহেতু ওর কাছের একজন বন্ধু, আমি বুঝতে পারি যে, এটা তার জন্য খুব খুব কঠিন।’

আরও পড়ুনওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা মুশফিকের১০ ঘণ্টা আগে

১৯ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৭৪ ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৯ ফিফটিতে ৩৬.

৪২ গড়ে মোট ৭৭৯৫ রান করা মুশফিক এই সংস্করণে তামিমের পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক। তিনি অবসর ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই ভিডিওবার্তাটি তামিমের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের হয়ে আর না খেলা নিশ্চিত করা তামিম তাঁর দীর্ঘদিনের এই সতীর্থের প্রতি আরও বলেন, ‘বন্ধু, তুমি যা কিছুই অর্জন করেছ, বাংলাদেশের জন্য অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে যা করেছ, এসব বছরের পর বছর মনে রাখা হবে।’

তামিম এরপর মুশফিকের প্রতি যোগ করেন, ‘এখনো তুই একটি সংস্করণে খেলবি—টেস্ট সংস্করণ। আমি সত্যিই আশা করি ও প্রার্থনা করি তুই ভালো কর। অন্তত ১০০টি টেস্ট খেল, যেটা বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলে নাই। আমি এটা আশা করব, ১০০তম টেস্ট অবশ্যই খেলবি। খুব আবেগপ্রবণ লাগছে, যেটা আমি টের পাচ্ছি, তুইও পাচ্ছিস। বাংলাদেশ তোকে মিস করবে। যা কিছুই করেছিস তুই দেশের জন্য, অনেক অনেক বছর সেসব মনে রাখা হবে...ধন্যবাদ, সবকিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ মুশফিক।’

মুশফিকের দীর্ঘদিনের আরেক সতীর্থ মাহমুদউল্লাহও তাঁকে বিদায়ী বার্তা দিয়েছেন। গতকাল গভীর রাতে মাহমুদউল্লাহর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা পোস্টে লেখা হয়, ‘প্রিয় মুশফিক, অসাধারণ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন। দুবাইয়ে ভাঙা পাঁজর নিয়ে তোমার সেঞ্চুরিটা এখনো মনে আছে। এটা খেলাটির প্রতি তোমার সম্মানবোধ, নিবেদন ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে কঠোর পরিশ্রমী মানসিকতার প্রমাণ। এটা যেকোনো ক্রিকেটারকেই প্রেরণা জোগাবে। কোনো সন্দেহ নেই তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন। লাল বলের অভিযাত্রার জন্য শুভকামনা।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স করণ অবসর ন র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন