নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য বিক্রির মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

এদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধীতা করে।

শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। কাফরুল থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর সুবীর ঘোষ রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) জিয়াউলকে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বছর ৯ অক্টোবর ১১ কোটির বেশি মানুষের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সেই মামলার এজাহার নামীয় আসামি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জয় ও পলক একটি সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নাগরিকদের এনআইডির তথ্য বিক্রির সুবিধা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবসার অনুমতি দেন। এসব তথ্য দেশি-বিদেশি প্রায় ১৮২টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এতে আরো বলা হয়, তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পাচার হওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে অপরাধ করেছেন আসামিরা।

ঢাকা/মামুন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দলের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা। দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরে পৌঁছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করাই মূল উদ্দেশ্য।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা লেখেন। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পরিচয়ে প্রতারণা, হাকিমপুর পৌর যুবদল নেতা বহিষ্কার

হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন

সেখানে তিনি লেখেন, “আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে, আজকের ও আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ছুটে যাচ্ছে তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে; গ্রাম থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও মজবুত করছে। এই সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।” 

নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ হাজারের বেশি দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের দায়ে কেউ পদচ্যুত হয়েছেন; আবার অনেকেই বহিষ্কৃত হয়েছেন। বহুমুখী অপপ্রচারের মাঝেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, তবে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এগুলো ছিল অপরিহার্য। শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়; বরং সেটিই আমাদের শক্তি। নিজেদের সদস্যদের দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই আবারও প্রমাণ হলো যে, বিএনপি সততার ব্যাপারে আন্তরিক, এবং আমরা ক্ষমতাসীনদের কাছে যেসব মানদণ্ড দাবি করি, নিজেদেরও ঠিক সেই একই মানদণ্ডে দাঁড় করাই।” 

“এইভাবেই আমরা জনগণের আস্থা পুনর্গঠন করতে চাই— বিশেষত তরুণদের, যারা রাজনীতিকে কেবলমাত্র ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখতে চায় না; বরং দেখতে চায় সবার অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা একটি মহৎ ক্ষেত্র হিসেবে” বলেন তিনি। 

তারেক রহমান বলেন, “সময়ের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিএনপি সব সময়ই নিজেকে আধুনিকায়ন করেছে। আমরা জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ও যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতিসহ ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে আমাদের নীতিমালা গড়ে উঠেছে। আমরা অন্তর্ভুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরো বেশি নারী, তরুণ নেতা ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যাতে জাতি আরও এগিয়ে যায় এবং রাজনীতি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে। আমরা চাই, বিএনপির পরিচয় হোক, সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে; বিভাজন কিংবা সুবিধাভোগের প্রতীক নয়।”

বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আলাদা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পদক্ষেপগুলোকেও হতে হবে নতুনভাবে চিন্তা-নির্ভর। তবে আমরা ইতিহাসকে অস্বীকার করি না; বরং তার ভিত্তিতেই এগিয়ে যেতে চাই।”

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন; জনগণের ক্ষমতায়নকে রাজনীতির কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করে গিয়েছেন। আজ আমরা তাঁদের সেই আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছি নতুন যুগে; যেখানে সততা, তরুণ নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হবে রাষ্ট্রগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।”

তিনি আরো বলেন, “নিজ ঐতিহ্যকে ধারণ করে, বিএনপি প্রাধান্য দিচ্ছে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, ভবিষ্যতমুখী এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানের পথযাত্রাকে। আমরা জানি, তরুণরা চায় বাস্তব সুযোগ, তারা ফাঁকা বুলি চায় না। জনগণ চায় স্থিতিশীলতা, তারা বিশৃঙ্খলা চায় না। আর বিশ্ব চায়, বাংলাদেশ হোক একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সম্মানিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই প্রত্যাশাগুলো পূরণে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

দলের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকি, এবং জনগণের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকি। আমি যেমন আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও তেমনি আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ হবে আরও উজ্জ্বল। আমরা একসাথে প্রমাণ করবো যে, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং গণআকাঙ্খিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।” 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • টিউলিপ এখনো বাংলাদেশের ভোটার, আছে পাসপোর্ট–এনআইডিও
  • ‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’
  • টিউলিপ এখনো বাংলাদেশের ভোটার, আছে পাসপোর্ট, এনআইডিও
  • পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
  • শেখ হাসিনার পরিবারের ১০ সদস্য ভোট দিতে পারবেন না: ইসি সচিব
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • শেরপুর নির্বাচন অফিসে রোহিঙ্গা আটক