মালয়েশিয়াকে উড়িয়ে সেমির লড়াইয়ে টিকে থাকল বাংলাদেশ
Published: 6th, March 2025 GMT
তেহরানে ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ সন্ধ্যায় মালয়েশিয়াকে ৫২-১২ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে আজই দুপুরে প্রথম ম্যাচে টুর্নামেন্টে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬৪-২৩ পয়েন্টে।
মালয়েশিয়া তাদের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে ৪৫-২৪ পয়েন্টে হেরেছে। টানা দুই হারে সেমিফাইনালের লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে মালয়েশিয়া। অন্যদিকে দুই ম্যাচে এক জয়ে শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে আছে লাল–সবুজের মেয়েরা। সাত বছর পর শুরু হওয়া এশিয়ান নারী কাবাডিতে ব্রোঞ্জ পদকের আশা নিয়ে তেহরান গেছে বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে ২৭ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের, মালয়েশিয়ার পাঁচ। দ্বিতীয়ার্ধেও একতরফা খেলেছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া কোনোমতে দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বেলা দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সাত দলের টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক ইরান, নেপাল ও ইরাক।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ পাঁচবার হয়েছে। চারবারই চ্যাম্পিয়ন ভারত। একবার দক্ষিণ কোরিয়া। ২০০৫ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট আর ২০০৮ সালে তৃতীয় টুর্নামেন্টে খেলেছে বাংলাদেশ। প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পায়। ২০০৭, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি।
ইরানের নিয়ম অনুযায়ী, নারীদের ম্যাচে কোনো পুরুষ থাকতে পারেন না। সে হিসেবে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার সুবিমল দাস (মূলত কোচ) ছিলেন অডিটরিয়ামের বাইরে। কোচ হিসেবে ডাগআউটে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের হয়ে দুটি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা শাহনাজ পারভীন মালেকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।