চেলসির ২১ হাজার কোটি টাকার স্কোয়াডই ইউরোপে সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল
Published: 7th, March 2025 GMT
২০২৪ অর্থবছর শেষে দলবদল ফি বিবেচনায় চেলসির স্কোয়াডই ইউরোপে সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলে জানিয়েছে উয়েফার নতুন প্রতিবেদন। ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ‘ইউরোপিয়ান ক্লাব ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ল্যান্ডস্কেপ’-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দলবদল খরচে সব মিলিয়ে ১৬৫ কোটি ৬০ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার ৭২৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা) খরচ করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি।
আরও পড়ুন২০৩০ বিশ্বকাপে ৬৪ দলকে খেলানোর প্রস্তাব, বিবেচনা করছে ফিফা৫৭ মিনিট আগেদল গড়তে চেলসির এই খরচ ছাপিয়ে গেছে ২০২৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ১৪২ কোটি ইউরোর স্কোয়াডকে। পেছনে পড়েছে ২০২০ সালে রিয়াল মাদ্রিদের ১৩৩ কোটি ইউরোর স্কোয়াডও।
২০২২ সালে মার্কিন ধনকুবের টড বোয়েলি ও ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল চেলসি কিনে নেওয়ার পর ক্লাবটিতে এ পর্যন্ত ৪১ খেলোয়াড়কে সই করানো হয়েছে। কিন্তু মাঠে তাঁরা সাফল্য পাচ্ছে না। গত মৌসুমে ছয়ে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করে চেলসি। এবার ২৭ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে পাঁচে। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে পিছিয়ে আছে ২১ পয়েন্ট ব্যবধানে। ২৮ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল।
রিয়াল মাদ্রিদ ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় করেছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কে এগিয়ে
ইসরায়েল শুক্রবার ভোরে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায়। এর আগে ২০২৪ সালে ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ২ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলের বড় বড় শহরে অন্তত ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর পাল্টা জবাবে ২৫ অক্টোবর ইসরায়েল ইরানে প্রায় ২০টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। তবে শুক্রবার ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি ঘটিয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ইরান: যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) ২০২৩ সালের ‘দ্য মিলিটারি ব্যালান্স’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের ৬ লাখ ১০ হাজার সক্রিয় সৈন্য রয়েছে। এ ছাড়া রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩ লাখ ৫০ হাজার। কিছু ব্যতিক্রম বাদে ১৮ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হয়। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইরান সামরিক খাতে ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার ব্যয় করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে, ইরানের আছে ১০ হাজার ৫১৩টির বেশি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, ৬ হাজার ৭৯৮টি আর্টিলারি গান ও ৬৪০টির বেশি সাঁজোয়া যান। সেনাবাহিনীর আছে ৫০টি হেলিকপ্টার এবং আইআরজিসির আছে ৫টি।
এ ছাড়া ইরানের বিমানবাহিনীর কাছে আছে ৩১২টি যুদ্ধোপযোগী বিমান, আর আইআরজিসির আছে ২৩টি। বিমানবাহিনীর রয়েছে দুটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সেনাবাহিনীর ৫০টি এবং আইআরজিসির ৫টি। ইরানের নৌবাহিনীর আছে ১৭টি ট্যাকটিক্যাল সাবমেরিন, ৬৮টি উপকূলীয় টহল ও যুদ্ধজাহাজ, ৭টি করভেট, ১২টি ল্যান্ডিং শিপ, ১১টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ও ১৮টি লজিস্টিক ও সহায়ক জাহাজ।
ফেব্রুয়ারিতে দেশটি ‘আজারাখশ’ (ফার্সি অর্থ বজ্র) নামের স্বল্পপাল্লার ও নিচু উচ্চতায় আঘাত হানতে সক্ষম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করে। এটি ইনফ্রারেড, রাডার ও ইলেকট্রো-অপটিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে এবং যানবাহনে স্থাপনযোগ্য। ইরানের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্ট অনুসারে, ইরানের কাছে অন্তত ১২ ধরনের স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
ইসরায়েল: আইআইএসএসের ২০২৩ সালের ‘দ্য মিলিটারি ব্যালান্স’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ সক্রিয় সৈন্য রয়েছে। তাদের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার। ১৮-ঊর্ধ্ব বয়সী অধিকাংশ নারী ও পুরুষের জন্য সামরিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক, তবে নির্দিষ্ট কিছু ছাড় আছে। দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে, ইসরায়েল ব্যয় করেছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন (২ হাজার ৭৫০ কোটি) ডলার, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। এ খাতে ব্যয় বেড়েছে মূলত ৭ অক্টোবরের পর শুরু করা গাজা যুদ্ধের কারণে। ইসরায়েলের আছে প্রায় ৪০০টি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, ৫৩০টি আর্টিলারি গান ও ১ হাজার ১৯০টির বেশি সাঁজোয়া যান।
ইসরায়েলের রয়েছে ৩৪৫টি যুদ্ধোপযোগী বিমান ও ৪৩টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। ইসরায়েলের রয়েছে ৫টি সাবমেরিন এবং ৪৯টি উপকূলীয় টহল ও যুদ্ধজাহাজ। দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো আয়রন ডোম, যা সম্প্রতি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বড় অংশ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এ ব্যবস্থায় একটি রাডার আছে, যা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র, এর গতি ও দিক নির্ণয় করে। নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বিশ্লেষণ করে ক্ষেপণাস্ত্রটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়বে কিনা। ইসরায়েলের আছে অন্তত চার ধরনের স্বল্প, মাঝারি ও মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর মধ্যে এলওআরএর পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার এবং জেরিকো-৩-এর পাল্লা ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলে মনে করা হয়। তবে তাদের একটি সমৃদ্ধ পারমাণবিক কর্মসূচি রয়েছে এবং দেশটি একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র পরিচালনা করে। খবর- বিবিসি।