এনসিপিকে আর্থিক সহযোগিতা করছেন সচ্ছল মানুষ, রয়টার্সের সাক্ষাৎকারের ভুল অনুবাদ হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
Published: 7th, March 2025 GMT
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের ভুল অনুবাদ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলছেন, ‘দলের আর্থিক বিষয়ে আমি বলেছিলাম যে সমাজের সচ্ছল মানুষ, আমাদের সচ্ছল সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী যাঁরা আছেন, তাঁরা মূলত আমাদের সহযোগিতা করেন। আমরা অনলাইন ও অফলাইনে একটা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের (গণচাঁদা সংগ্রহ) দিকে যাচ্ছি, যে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে আমরা দলের কার্যালয় স্থাপনসহ নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করব। আমার এই কথার একটা ভুল অনুবাদ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এনসিপির এক সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। গতকাল রয়টার্সে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশজুড়ে অনেক ‘সম্পদশালী’ (অ্যাফ্লুয়েন্ট) ব্যক্তি তাঁদের দলকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পুরোপুরি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি এবং এ বছর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে—এ কথাও নাহিদের বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছিল। ওই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, গতকাল রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে কিছু মিসকোট হয়েছে বা ভুল অনুবাদ হয়েছে। এটা সংশোধনের জন্য তাদের অনুরোধ থাকবে।
দলের আর্থিক বিষয় ছাড়াও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে তাঁর বক্তব্য ভুলভাবে গণমাধ্যমে এসেছে বলে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বছর নির্বাচন করা সম্ভব নয়—কথাটা তিনি রয়টার্সকে এভাবে বলেননি বলে দাবি করেন তিনি। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, এখন দেশে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ যে রকম নাজুক অবস্থায় আছে, এ রকম অবস্থায় নির্বাচন করাটা অনেক বেশি কঠিন হবে এবং এই পুলিশ-প্রশাসনের একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার সক্ষমতার পরীক্ষা দীর্ঘদিন ধরে হয়নি। সেই জায়গা থেকে আমি বলেছি, আমাদের নির্বাচনের আগে দেশের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা অবশ্যই উন্নত করতে হবে। সেটার জন্য সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সামাজিক শক্তিকেও এগিয়ে এসে সহযোগিতা করতে হবে।’
নির্বাচনের জন্য এনসিপির মানসিকতা ও প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে বলেছি, আমরা গণপরিষদ নির্বাচন দেখতে চাই জাতীয় সংসদের পাশাপাশি। কেবল নির্বাচনই এই মুহূর্তে এনসিপির একমাত্র দাবি নয়। আমরা গণপরিষদ বা জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছি, কিন্তু তার আগে আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে চাই।’
এই সংবাদ সম্মেলনের আগে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রথম সাধারণ সভা হয়। এই সভায় দলের কিছু কর্মসূচি ঠিক করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির কথা জানান এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ মার্চ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইফতার মাহফিল করবে এনসিপি। আর ১১ মার্চ বিদ্যমান রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে এনসিপির পক্ষ থেকে ইফতার পার্টি করবে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা দলটি। তবে এই ইফতার পার্টি কোথায় হবে, তা জানাননি আখতার।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ল অন ব দ এনস প র রয়ট র স আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক