রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তাদের নিয়ে ‘জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর’ আত্মপ্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে জুলাইয়ের শহীদ এবং আহতদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়। 

শুক্রবার মিরপুর ১ নম্বরে হযরত শাহ আলী (র.) মাজার কমপ্লেক্সে দোয়া এবং ইফতার মাহফিলে মিরপুরের শতাধিক ছাত্র ও পেশাজীবী অংশ নেন।

কবি ও সাংস্কৃতিক  সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটটা যেন জীবন্ত থাকে সে লক্ষ্যে আমরা মিরপুরের যারা এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম তারা যেন কাজ করে যেতে পারি সেজন্য এই জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের যাত্রা। সামাজিক সেবামূলক ও সাংস্কৃতিক জায়গা থেকে কী কী করা যায় তা আমরা সবাই মিলে চিন্তা করে একে একে বাস্তবায়ন করব। জুলাইয়ের শহীদদের পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে, আহতরা এখন কীভাবে জীবন পার করছেন তা দেখার দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রের একার না। আমরা যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, সবারই কিছু না কিছু অবদান রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

হযরত শাহ আলী (র.

) মাজারে প্রথম আয়োজন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ রোমেল বলেন, মাজার এমন একটি জায়গা যেখানে সব শ্রেণি, পেশা, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ আসেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও আমরা দেখেছি সব ধরনের মানুষ পথে নেমে এসে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি মিল রয়েছে। এ জন্য আমরা ভেবেছি মিরপুরের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং সব পেশার মানুষজনকে নিয়ে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করব, যাতে করে জুলাইয়ের স্পিরিট হারিয়ে না যায়।

অনুষ্ঠানে গবেষক সাদিক এম আলম, উন্নয়ন গবেষক মোহাম্মদ আযম, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী মিলন হোসেনসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। দোয়া এবং ইফতার মাহফিল আয়োজনে কাজ করেন লেখক উদয় হাসান, সাংবাদিক শরীফ খিয়াম আহমেদ ও তৌফিক হাসান, মো. জামিলুর রহমান, অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ, নাহিদ বাদশাহ, হাফিজুর রহমান মনি, জুই চৌধুরী, সিলমী সাদিয়া প্রমুখ।

জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। ছবি: শরীফ খিয়াম আহমেদ

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় জুলাই হত্যার বিচার ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের আকুতি জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান। 

আরো পড়ুন:

জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ

জাবি ছাত্রদলের ১৫ নেতাকে অব্যাহতি

এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। 

এসব শহীদরা হলেন, আলিফ আহম্মদ সিয়াম, শ্রাবণ গাজী, শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাফওয়ান আখতার সদ্য, মো. কুরমান শেখ, ছায়াদ মাহমুদ খান, নিশান খান, আস-সাবুর ও সুজন মিয়া।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর শহীদদের স্বরণে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও দেখানো হয়। পরে শহীদদের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা, সনদ ও স্মারক প্রদান করা হয়।

শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি ১ বছর হতে চললো। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচার এখনো নিশ্চিত হয়নি। আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ চেয়ারে বসেছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করুন।” 

শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মো. মান্নান গাজী বলেন, “আমাদের সন্তানরা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু হাসাপাতালে যারা আহত আছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।”

শহীদ নাফিসা হোসেনের মামা মো. হজরত আলী নাফিসার শহীদ হওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জুলাই শহীদদের পরিবারের পুর্নগঠন এবং শহীদদের নামে হল, সড়ক বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি করা হয়েছে, আমি প্রশাসনের একজন হয়ে তা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তুলব।”

তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের এখানে যেহেতু কিন্ডারগার্টেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করা হোক। এ বিষয়ে আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। একইসঙ্গে জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

এর আগে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষকরা।

গত ১৪ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বরণ ও ধারণ করতে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল
  • পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
  • নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম
  • কুয়েটে ৫ মাস ১০ দিন পর ক্লাস শুরু