আ.লীগ নেতার ফেসবুক প্রোফাইলজুড়ে খালেদা জিয়ার ছবি
Published: 7th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতার ফেসবুক প্রোফাইল এবং কভার ফটোতে খালেদা জিয়ার ছবি দেখা গেছে। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মাজহারুল ইসলাম পিন্টু। তিনি উপজেলার বানাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, মাজহারুল ইসলাম পিন্টু বানাইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আত্মীয়তার সুত্র ধরে ২০০৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর পক্ষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করেন এবং আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার পর বানইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং বর্তমানে তিনি ওই পদেই আছেন।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগষ্ট পিন্টুর ফেসবুক প্রোফাইল এবং কভার ফটোতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি আপলোড করা হয়। এরপর ২১ আগষ্ট স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং অন্যান্য বিএনপি নেতাদের ছবি তার ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা পিন্টুর ফেসবুক আইডিতে খালেদা জিয়া এবং বিএনপির নেতাদের ছবি পোষ্ট হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থদের মধ্যে বিরূপ প্রতিত্রিয়া দেখা দেয়। এনিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বানাইল ইউনিযন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকট আনিসুর রহমান হুমায়ুন বলেন, প্রথমে তিনিও ওইসব পোষ্টে বিভ্রান্ত হয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় পিন্টুর আইডি হ্যাক হয়েছে। তিনি এখনও আওয়ামী লীগেই আছেন, বিএনপিতে যোগ দেননি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আমরাও অবাক হয়েছি। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার আইডি হ্যাক হয়েছে।
মির্জাপুর পৌর বিএনপির সভাপতি হযরত আলী মিঞা বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের পদধারী কোনো নেতা বিএনপিতে যোগদানের কোনো সুযোগ নেই। পিন্টুর বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে তার জানা নেই বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে বানাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ‘আমার আইডি হ্যাক হয়েছে। অনেকদিন ধরে আমার আইডি থেকে এসব পোষ্ট দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় জিডি করা আছে। আমি এখনও আওয়ামী লীগেই আছি। ১৫ আগষ্ট শোক দিবস পালন করে আমি মামলার আসামি হয়েছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত র ফ সব ক ন আওয় ম ক হয় ছ র আইড ব এনপ আগষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না
জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।
আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।
লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।
তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।