পুলিশের জনবল স্বল্পতার কথা তুলে ধরে ঈদের আগে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার জানান, পুলিশকে সহায়তাকারী হিসেবে ৫০০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনবলে অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স নিয়োগের ক্ষমতা আমার আছে। আমি সেই মোতাবেক অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স হিসেবে যারা প্রাইভেট নিরাপত্তার লোকেরা আছে, ওনাদের নিয়োগ দিচ্ছি।’

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী বলেন, ‘রমজানের সময় যেহেতু অনেক রাত পর্যন্ত শপিং মলটা খোলা থাকবে। আমাদের পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনবলে অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স নিয়োগের ক্ষমতা আমার ওপর আছে। আমি তাঁদের অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাঁদের হাতে একটা ব্যান্ড থাকবে। তাতে লেখা থাকবে ‘সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা’। আইন মোতাবেক, আমি বা আমার পুলিশ অফিসার যে ক্ষমতা ভোগ করেন, যে দায়িত্ব পালন করেন, সেই একইরূপ দায়িত্ব পালন করবেন। যেকোনো ব্যক্তিকে ওনারা গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অফিসাররা আইনগতভাবে যে প্রটেকশন পান, ওনারাও সেই প্রটেকশন পাবেন। সেই কার্যক্রম শুরু করেছি।’

পুলিশের সহায়তাকারী অক্সিলারি ফোর্সের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘দিস ম্যান সার্টিফায়েড বাই পুলিশ কমিশনার, হি ইজ সিম্পলি পুলিশ অফিসার। হি ইজ রিগার্ডেড অ্যাজ এ পুলিশ অফিসার। পুলিশ অফিসার যে দায়িত্ব পালন করেন, ওই ব্যক্তিও একই দায়িত্ব পালন করবেন। আইনের যে প্রটেকশন আমার অফিসার পায়, আমি পাই, সেই একই প্রটেকশন উনিও পাবেন। উনি যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার সক্ষমতা বা ক্ষমতা পাবেন।’

মব জাস্টিসের দু–চারটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, কোনো বাড়িতে, কোনো অফিসে স্বর্ণ আছে, টাকা আছে, এমন খবর পাওয়ার কোনো ভাবে, কোনো ব্যক্তির অধিকার নেই, অভিযান চালিয়ে সেই বাসা বা অফিস তছনছ করার। এ ব্যাপারে আমরা কঠোর। দু–তিনটি ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠিন মামলা নিয়েছি।’

হিযবুত তাহ্‌রীর বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারিং করছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের সে রকম কোনো গোয়েন্দা নাই। ডিবির প্রধান, আপনারা যাঁকে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ঠিক ওই অর্থে তাঁরা গোয়েন্দা না। গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান কাজ হচ্ছে, অগ্রিম ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহ করা। আমরা যে বিভাগ ডিবি, তারা মূলত ক্রিমিনালদের নিয়ে কাজ করে। ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করে। আমরা ইতিমধ্যে হিযবুত তাহ্‌রীরের ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।’

জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয় এমন খবর বারবার প্রচার না করার পরামর্শ দেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে মিশন, আপনাদেরও সেই একই মিশন। পেশাগতভাবে আপনারা একদিকে আছেন, আমরা একদিকে আছি। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা এমন কোনো ঘটনা দেখাবেন না, যাতে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। একটি–দুটি ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত, আমরা চেষ্টা করি, সেই ঘটনা উদ্‌ঘাটনের। বনশ্রীর ডাকাতির ঘটনা যে পরিমাণ ভাইরাল হয়েছে, তাতে জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।’

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিক) প্রতি আমার অনুরোধ, যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, তাঁদের প্রতি অনুরোধ, সাংবাদিক হিসেবে আপনাদের এথিকসেও আসবে, বনশ্রীর মতো ঘটনা আপনারা প্রকাশ করেন। তবে একাধিকবার একই ঘটনা যদি প্রকাশ করেন, তাতে অনেক শিশু, অনেক বৃদ্ধ, অনেক দুর্বল চিত্তের লোকের মধ্যে বেশি আতঙ্ক তৈরি হয়।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ল শ অফ স র আপন দ র অন র ধ ড এমপ ক ষমত আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টি, জনমনে প্রশান্তি

আষাঢ়ের প্রথম দিনে আজ রোববার রাজশাহীতে বৃষ্টি ঝরেছে। প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র গরমের পর এই বৃষ্টির ছোঁয়ায় জনমনে ফিরেছে স্বস্তি। দুপুরে রাজশাহীতে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে সর্বশেষ ৩ জুন ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর পর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয়নি। রাজশাহীতে ঈদের দিন থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে। ঈদের দিন ৭ জুন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়।

গতকাল শনিবারও দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দুপুরের আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃষ্টির পর তাপমাত্রা অনেকটা কমে এসেছে। আকাশে বেড়েছে মেঘের আনাগোনা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র গরম শেষে আজ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কমেছে। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে এখন মৌসুমি বায়ু বেশি সক্রিয়।’

বৃষ্টির পর প্রচণ্ড গরমে ক্লান্ত এ মহানগর যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গাছপালা ও লতাপাতায় জমে থাকা ধুলাবালু ধুয়ে গেছে। নগরের মেহেরচণ্ডী এলাকায় কথা হয় রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী আবু ইউসুফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আজ সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অন্য দিনের মতো প্রচণ্ড রোদ আর গরম ছিল। শরীর থেকে ঘাম ঝরছিল। কোথা থেকে যেন মেঘ উড়ে এসে বৃষ্টি দিয়ে গেল। সব ক্লান্তি কেটে গেছে।’

পবা উপজেলার মোসলেমের মোড়ে কথা হয় অটোরিকশাচালক মো. রনির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদের কারণে অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়া যেত না কয়েক দিন। ছাতা ও গামছা নিয়ে বের হতে হতো। আজকে বৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ভালো লাগছে।’
নগরের মোহনপুর এলাকায় আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছিলেন মো. আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কাজ করছিলাম। তখন প্রচণ্ড রোদ ছিল। ঘেমে একাকার হয়ে গেছি। কাজ করতে করতেই দুপুরে বৃষ্টি আসে। শরীরের ঘাম বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আষাঢ়ের প্রথম দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টি, জনমনে প্রশান্তি