ধর্ষণের বিচার দাবিতে জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের মানবন্ধন
Published: 9th, March 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানবন্ধন করেন তারা৷ এতে বিভাগটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।
মানবন্ধনে তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে চলছে। সাধারণ মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থায় দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা খানম বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে ধর্ষণের মতো কর্মকাণ্ড মোটেও কাম্য নয় এবং আমরা এটি সমর্থন করি না৷ মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের পর গত রাতে গাজীপুরেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷ সবমিলিয়ে দেশের অবস্থা এখন ভয়ানক৷ শিশু থেকে বয়স্ক কেউই এখন নিরাপদ না৷ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।’
চলমান ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিরা খাতুন বলেন, ‘দেশে চলমান ধর্ষণ, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আমরা ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করেছি। ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ, যা ভুক্তভোগীকে চরম ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়। আট বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সমাজের সম্মিলিত প্রয়োগে এখনই সময় ধর্ষকের বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলার।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘দেশের কোথাও নারীরা আসলে নিরাপত্তা পাচ্ছে না, এমনকি শিশুরাও ছাড় পাচ্ছে না৷ ফলে ধর্ষণকাণ্ডের মতো ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে৷ মূলত বিচারহীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷ সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাই, এ ধরনের আর একটি ঘটনাও যেন না ঘটে এবং যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷'
এদিকে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানবন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এতে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন৷
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন?
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।
ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা, চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।